
বিজেপিতে ক্রমশই গুরুত্ব বাড়ছে শুভেন্দু অধিকারীর। বিশেষ করে বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর। রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের তেমনই অনুমান। যা নিয়ে দিলীপ ঘোষের লবি যে খুব একটা খুশি নয় তা বলাই বাহুল্য।
সম্প্রতি, দিলীপ ঘোষকে একপ্রকার অন্ধকারে রেখেই শুভেন্দু অধিকারী দিল্লি সফর করেন। দেখা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। দিল্লির নেতৃত্ব যে দিলীপ ঘোষের তুলনায় শুভেন্দুর উপর ফলাফল পরবর্তী বিপর্যয় সামলাতে বেশি ভরসা করছেন - তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
রাজ্য বিজেপির ক্ষমতার ভরকেন্দ্র এখন দুই শিবিরে বিভক্ত। এক শিবিরে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেত্বত্ব। অন্যদিকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েই বিরোধী দলনেতা হওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে। যা একসময় মুকুল রায়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
ভোটের ফলাফলের পর মুকুল রায় আদৌ বিজেপিতে থাকবেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত মমতা ঘনিষ্ঠ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর বিভিন্নরকম গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে মুকুল রায়কে ঘিরে।
একসময় দিলীপ শিবিরই শুভেন্দুর বিজেপিতে আসায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। কারণ, বিজেপির অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র ধীরে ধীরে শুভেন্দুর দিকে সরছিল। যা দিলীপ শিবিরের কাছে স্বস্তিদায়ক ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই শুভেন্দুই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অন্যতম আস্থাভাজন হয়ে ওঠায় দিলীপ ঘোষের অস্বস্তি বাড়ার সম্ভাবনা।
বাংলায় ক্ষমতা দখলের আশাভঙ্গের পর বিজেপি কার্যত ছত্রভঙ্গ। তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিলীপ ঘোষের তুলনায় সংসদীয় রাজনীতিতে বেশি অভিজ্ঞ শুভেন্দুর উপরেই ভরসা রাখছেন। তাছাড়া দিলীপ ঘোষকে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ক্ষোভও আছে। তাঁর আলটপকা মন্তব্যও খুব একটা ভালোভাবে নিচ্ছেন না তাঁরা।
দলীয় কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার, ফোন না তোলারও অভিযোগও আছে দিলীপের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে বিজেপির প্রবীণ নেতা তথাগত রায়ও ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। সঠিক ব্যক্তির বদলে টলিউডের “নটী”দের কিংবা সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের প্রার্থী করা নিয়ে তথাগত রায় বেনজির আক্রমণ শানিয়েছিলেন।
যদিও দিলীপ ঘোষ শিবির এসব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের কথায় বিজেপি রাজ্যে ৩ থেকে ৭৭ তে উঠে এসেছে শুধুমাত্র দিলীপ ঘোষের পরিশ্রমে। তাছাড়া দিলীপ ঘোষ আরএসএস এর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় বিজেপিতে শুভেন্দুর সর্বেসর্বা হয়ে ওঠা এত সহজ হবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন