

রাজস্থানে গেহলট বনাম পাইলট দ্বন্দ্বে নতুন মোড়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদের ক্ষমতা হস্তান্তর যতটা সহজ হবে ভাবা গেছিল গতকালের ঘটনায় প্রমাণ হয়ে গেছে তা আদৌ সহজ হবে না। বরং গেহলট অনুগত শিবিরের ৯০জন কংগ্রেস বিধায়কের ইস্তফা দেবার হুমকিতে কার্যত দিশেহারা কংগ্রেস নেতৃত্ব। গতকালের বৈঠকে অনুপস্থিত বিধায়কদের 'উচ্ছৃঙ্খল' বলে জানিয়েছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে নিজের অনুগতদের এই বিদ্রোহের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন অশোক গেহলট। যদিও গেহলটের এই মন্তব্যে আদৌ আস্থা রাখছে না রাজনৈতিক মহল। বরং, তাদের মতে, গেহলটের প্রশ্রয় ছাড়া তাঁর শিবিরের পক্ষে এই ধরণের বিদ্রোহ সম্ভব নয়।
রবিবার সন্ধ্যেয় জয়পুরে রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে বৈঠক হবার কথা ছিল। যদিও সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাজস্থানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অজয় মাকেন উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন অশোক গেহলট অনুগত ৯০ জন বিধায়ক। শচীন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে তাঁরা গণ ইস্তফা দেবেন বলেও গেহলট শিবিরের বিধায়করা প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়েছেন। এই ঘটনার পর অজয় মাকেন এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে জয়পুর থেকে দিল্লিতে ফিরে আসেন।
অশোক গেহলটের পরিবর্ত হিসেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের প্রথম পছন্দ শচীন পাইলট। কংগ্রেস সভাপতি পদে গেহলটের নির্বাচনের পর তাঁর জায়গায় তাই ভাবা হয়েছিল শচীন পাইলটের নাম। যদিও শচীন পাইলটের নিযুক্তিতে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়েছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট।
তাঁর দাবি ছিল কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেও তিনিই মুখ্যমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব সামলাবেন। যদিও এই বিষয়ে রাহুল গান্ধী ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি অনুসারে দল চলবে স্পষ্ট করে দেবার পর পিছু হটেন অশোক গেহলট। যদিও তখন তিনি দাবি তোলেন তাঁর শিবিরের কাউকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। যে দাবি প্রাথমিকভাবে মানেনি কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
জানা গেছে, গতকাল কংগ্রেসের ডাকা সভায় যোগ না দিয়ে গেহলট অনুগামী বিধায়করা কংগ্রেস বিধায়ক শান্তি ধারিওয়ালের বাড়ি চলে যান এবং সেখানে এক বৈঠকে মিলিত হন। যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হলেও নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গেহলট শিবিরের কাউকেই বেছে নিতে হবে। বিশেষ করে শচীন পাইলটের বিদ্রোহের সময় যারা অশোক গেহলটের সঙ্গে ছিলেন।
এই বৈঠকের পরেই ৯২জন গেহলট অনুগামী বিধায়ক ইস্তফা দেবার জন্য বিধানসভার স্পীকার সি পি জোশীর বাড়ি চলে যান। রাজনৈতিক মহলের মতে নিতান্তই চাপ দেবার জন্য এই কৌশল নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০ আসন বিশিষ্ট রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১০৭ জন এবং ১৩ জন নির্দল বিধায়ক গেহলটকে সমর্থন করেন। যে নির্দল বিধায়কদের বেশিরভাগই প্রাক্তন কংগ্রেসী এবং গেহলট অনুগামী।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন