Larry Ellison: ইলন মাস্ককে টপকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এখন ওরাকলের ল্যারি এলিসন!

People's Reporter: ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ারস ইনডেক্স অনুযায়ী, বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) একদিনেই ল্যারির সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১০১ বিলিয়ন ডলার, যা ইনডেক্সের ইতিহাসে সর্বাধিক একদিনের বৃদ্ধি।
ল্যারি এলিসন এবং ইলন মাস্ক (বাঁদিক থেকে)
ল্যারি এলিসন এবং ইলন মাস্ক (বাঁদিক থেকে)ছবি - সংগৃহীত
Published on

এত দিন বিশ্বের সব থেকে ধনী ব্যক্তির আসন দখল করেছিলেন ইলন মাস্ক। কিন্তু তাঁকে পিছনে ফেলে এ বার বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির তালিকার শীর্ষে উঠে এলেন মার্কিন প্রযুক্তিভিত্তিক সংস্থা ওরাকল কর্পোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ারস ইনডেক্স অনুযায়ী, বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) একদিনেই তাঁর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১০১ বিলিয়ন ডলার, যা ইনডেক্সের ইতিহাসে সর্বাধিক একদিনের বৃদ্ধি। এর ফলে তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৩৯৩ বিলিয়ন ডলারে, আর ইলন মাস্ক নেমে গেছেন ৩৮৫ বিলিয়ন ডলারে।

৮১ বছর বয়সি ল্যারি এলিসন ওরাকলের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত শেয়ারহোল্ডার। মঙ্গলবার ওরাকলের শেয়ারের দাম ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যা ১৯৯২ সালের পর সবচেয়ে বড় একদিনের বৃদ্ধি। সংস্থার প্রত্যাশার থেকেও ভালো ত্রৈমাসিক ফলাফল ও সামনের দিনগুলিতে বহুমূল্যের চুক্তির ঘোষণা বাজারে আস্থা বাড়িয়েছে। এর জেরেই আকাশচুম্বী হয়েছে কোম্পানির শেয়ারদর, আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এলিসনের সম্পদও।

১৯৭৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় ল্যারি এলিসন, বব মাইনার ও এড ওটেস মিলে গড়ে তোলেন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরিজ। সিআইএ–এর জন্য তারা তৈরি করে একটি ডেটাবেস প্রোগ্রাম, যার কোডনেম ছিল 'Oracle'। পাঁচ বছর পর প্রতিষ্ঠানটির নাম হয় 'ওরাকল'। ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এই প্রতিষ্ঠানটি। চার দশকের বেশি সময় ধরে প্রযুক্তি জগতে সাফল্যের পর সাফল্য দেখিয়েছে এই সংস্থা।

এলিসন বহু বছর ওরাকলের প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তবে এখনো সংস্থার এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ও চিফ টেকনোলজি অফিসারের দায়িত্বে আছেন তিনি।

তবে ল্যারি এলিসনের ব্যক্তিগত জীবনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ২০১২ সালে তিনি হাওয়াইয়ের ষষ্ঠ বৃহত্তম দ্বীপ লানাইয়ের ৯৮ শতাংশ কিনে নেন। নৌকা চালনায় তিনি ভীষণ আগ্রহী। পাশাপাশি তিনি নিয়মিত রিপাবলিকান রাজনীতিতে অর্থ সাহায্য করে থাকেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কো রুবিও থেকে শুরু করে টিম স্কটের প্রচারাভিযানে মিলিয়ন ডলার দান করেছেন ল্যারি এলিসন।

শুধু রাজনীতি নয়, চিকিৎসা গবেষণাতেও তিনি বিপুল অর্থ দিয়েছেন। ২০১৬ সালে ২০০ মিলিয়ন ডলার দেন ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াকে, যেখানে একটি ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। ২০১০ সালে বিল গেটসের উদ্যোগে গিভিং প্লেজ–এ সই করে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন নিজের ৯৫ শতাংশ সম্পদ দান করবেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি জানান, সেই অর্থের একটি বড় অংশ তাঁর প্রতিষ্ঠিত Ellison Institute of Technology–তে ব্যয় হবে।

এই প্রতিষ্ঠান কাজ করছে মানবকল্যাণে। নতুন ওষুধ উদ্ভাবন, খাদ্য সংকট মোকাবিলা করতে উচ্চ ফলনশীল ফসল তৈরি, সস্তায় ইনডোর ফার্মিং সিস্টেম গড়ে তোলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি প্রযুক্তি উন্নয়নে।

অন্যদিকে, ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলার শেয়ার চলতি বছরে প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে ইলন মাস্কের সম্পদে। যদিও জানা গিয়েছে, টেসলার বোর্ড মাস্ককে বিশাল এক পে-প্যাকেজ দিতে চলেছে। সফল হলে তিনি ভবিষ্যতে বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার হতে পারেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে প্রথম বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি তালিকায় শীর্ষে উঠে আসেন ইলন মাস্ক। এরপর তাঁকে ছাড়িয়ে যান অ্যামাজনের জেফ বেজোস ও এলভিএমএইচ–এর বার্নার্ড আর্নো। মাস্ক ফের ফিরে এসেছিলেন শীর্ষে এবং প্রায় ৩০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ধরে রেখেছিলেন ধনীতম ব্যক্তির আসন। তবে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে সেই জায়গা দখল করলেন ৮১ বছর বয়সি টেক বিলিয়নিয়ার ল্যারি এলিসন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in