একদিকে জ্বলছে মণিপুর, অন্যদিকে মার্কিন মুলুকে গণতন্ত্র নিয়ে বড়াই মোদীর

২০১৪ সালে সরকার গঠন করার পর এই প্রথমবার তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। তাও আবার স্বদেশে নয়, সাত সমুদ্র আর তেরো নদী পার করে মার্কিন মুলুকে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি।
মার্কিন সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী
মার্কিন সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী
Published on

পুরনো রেকর্ড ভেঙে নিত্যনতুন নজির গড়া প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর কাছে খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। ছক ভাঙা কাজ করতে তিনি ভালোবাসেন। এবারেও সেরকমই এমন এক কাজ করলেন তিনি যা গত ৯ বছর সরকারে থেকে একবারও করেননি। ২০১৪ সালে সরকার গঠন করার পর এই প্রথমবার তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। তাও আবার স্বদেশে নয়, সাত সমুদ্র আর তেরো নদী পার করে মার্কিন মুলুকে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। তবে এই সম্মেলনে তিনি একা ছিলেন না, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঐতিহাসিক এই সম্মেলনে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বৃহস্পতিবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা সফরের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটনে পৌঁছন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সস্ত্রীক তাঁকে হোয়াইট হাউসে অভ্যর্থনা নানা। আমেরিকা পৌঁছেই বাইডেনের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। গত ৯ বছরের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে নরেন্দ্র মোদী এই প্রথমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিলেন। অতীতে অন্য কোনও বিদেশ সফরে গিয়েও তিনি এই কাণ্ড ঘটাননি। সেই সাংবাদিক সম্মেলনেই বৈষম্যের রাজনীতি, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে এক মার্কিন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে নরেন্দ্র মোদী জানান, “গণতন্ত্র আমাদের ডিএনএ-তে রয়েছে। ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের শিরায় শিরায় গণতন্ত্র ছড়িয়ে আছে।”

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি আরও জানান, “আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমাদের পূর্বসূরিরা সংবিধানের রূপ দিয়ে যে গণতন্ত্র তৈরি করে গিয়েছেন, আজ আমাদের গোটা দেশ সেই গণতন্ত্র মেনে চলে। আমাদের গণতন্ত্রে বৈষম্যের কোনও জায়গা নেই। আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভিত্তিতে বিভেদ করি না।” অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মুখেও এদিন ভারতের প্রশংসা শোনা যায়। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের মর্যাদায় বিশ্বাস করি, এটা আমেরিকার ডিএনএ-তে রয়েছে। এবং আমি বিশ্বাস করি ভারতের ডিএনএ-তেও এটা আছে। আমাদের সাফল্যে গোটা বিশ্বের কৃতিত্ব রয়েছে।”

২০১৪ সালে সরকারে আসার পর থেকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির প্রধান অভিযোগ ছিল গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ, সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় মেরুকরণ, প্রতিহিংসাপরায়ন বৈষম্যের রাজনীতি, সাধারণ মানুষকে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ইত্যাদি। এমনকি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুরে গত প্রায় দু মাস ধরে চলা সাম্প্রদায়িক হানাহানি নিয়ে কোনও কথা না বলেই তিনি মার্কিন মুলুক রওনা দিয়েছেন। এই অবস্থায় দূর দেশে গিয়ে সেখানকার মিডিয়ার সামনে তাঁকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে সাফাই দিতে হবে সেটাই স্বাভাবিক।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in