

ঋষি আগরওয়ালের মালিকানাধীন গুজরাট ভিত্তিক ‘এবিজি শিপইয়ার্ড’ ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ সহ ২৮ টি ব্যাঙ্ককের ২২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা জালিয়াতি করেছে। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস রবিবার কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই যে মামলা যেভাবে ঢিমেতালে চলেছে, তাতে প্রমাণ করে, মোদি সরকারের ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে যারা বসে আছে তাদের যোগসাজশ আছে এই প্রতারকদের।
চণ্ডীগড়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, “ গত ৭৫ বছরে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি হয়েছে মোদী সরকারের আমলে। গত ৭ বছরে ৫.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার ‘ব্যাঙ্ক জালিয়াতি’ হয়েছে।”
তিনি বলেন, জনসাধারণের অর্থ নির্লজ্জভাবে আত্মসাৎ করার অনুমতি দেওয়ার পরে ৫ বছর দেরি করে সিবিআই অবশেষে ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারিতে ঋষি আগরওয়ালের মালিকানাধীন গুজরাট ভিত্তিক এবিজি শিপইয়ার্ডের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন যে, মোদী সরকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের জন্য একটি “লুট এবং পালায়ন” স্কিম চালাচ্ছে। তাঁর কথায় – “প্রতারকদের তালিকার মধ্যে রয়েছে নীরব মোদী- অর্থাৎ ছোট মোদী, মেহুল চোকসি, নিশাল মোদী, ললিত মোদি, বিজয় মাল্য, যতীন মেহতা, চেতন সান্দেসরা, নীতিন সান্দেসরা সহ বিজেপি ঘনিষ্ঠরা। ঋষি আগরওয়াল হলেন ‘শেহেনশাহ’-র নতুন রত্ন। ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে যারা বসে আছেন তাঁদের সাথে প্রতারকদের যোগসাজশ প্রতারণা আরও বড় আকার ধারণ করেছে।”
মামলা দায়ের করতে সিবিআইয়ের দেরি করা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কংগ্রেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ 8 নভেম্বর ২০১৯-এ, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবিজি শিপইয়ার্ডের ঋষি আগরওয়াল এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করার জন্য সিবিআই-এর কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল। স্পষ্টত জালিয়াতি এবং জনসাধারণের অর্থ প্রতারণা সত্ত্বেও সিবিআই এবং মোদী সরকার ফাইল-ঠেলাঠেলিতে পুরো বিষয়টিকে জটিল করে তুলেছিল।
কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, ABG শিপইয়ার্ডকে ২০০৭ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকার ১,২১,০০০ বর্গ মিটার জমি বরাদ্দ করেছিল। CAG গুজরাট সরকারকে ABG শিপইয়ার্ডকে প্রতি বর্গমিটারের জন্য ৭০০ টাকায় জমি বরাদ্দ করার জন্য আপত্তি জানায়। সেই সময় জমির দাম ছিল প্রতি বর্গমিটার ১,৪০০ টাকা।
আরেকটি আশ্চর্যজনক দিক হল যে, সিএজি রিপোর্ট সত্ত্বেও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকার গুজরাটের দাহেজে এবিজি শিপইয়ার্ড এবং ঋষি আগরওয়ালকে ৫০ হেক্টর জমি বরাদ্দ করতে উদ্যোগী হয়েছিল। এই দাহেজ প্রকল্পটি এবিজি শিপইয়ার্ড ২০১৫ সালে বন্ধ করে দিয়েছিল।” সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, “এবিজি শিপইয়ার্ডের ২২,৮৪২ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক প্রতারণার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করতে ৫ বছর সময় লাগল কেন?”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন