মমতার একুশের মঞ্চের নিশানায় শুধুই 'গদাই', বাদ 'জগাই মাধাই' - বাম-কং শূন্য বিধানসভা এফেক্ট!

২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাম কংগ্রেস ও বিজেপিকে একই আসনে বসিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম দিয়েছিলেন জগাই মাধাই ও গদাই। কিন্তু নির্বাচন শেষ এখন শুধু নিশানায় বিজেপি অর্থাৎ গদাই
২১ জুলাই ভার্চুয়াল সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
২১ জুলাই ভার্চুয়াল সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ছবি এআইটিএমসি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের সৌজন্যে

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাম কংগ্রেস ও বিজেপিকে একই আসনে বসিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম দিয়েছিলেন জগাই মাধাই ও গদাই। কিন্তু নির্বাচন শেষ এখন শুধু নিশানায় বিজেপি অর্থাৎ গদাই। তাই বুধবার ২১ জুলাই মঞ্চ থেকে জগাই ও গদাইকে নিয়ে মৌনতা পালন করলেন মমতা।

২১ জুলাই ঘটনার সময় রাজ্যে তৎকালীন সরকার ছিলো বামেদের। কিন্তু সেই বামেদের বিরুদ্ধে এবার একটি বাক্য খরচ করলেন না নেত্রী। পাশাপাশি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একেবারে নীরবতা। একসময় তিনি কংগ্রেস কর্মী ছিলেন। কিন্তু দলত্যাগী হওয়ার পর অনেক বিষাদের সুর তার গলাতেও ছিলো। যদিও এদিন বিজেপি ছাড়া কারোর বিরেদ্ধে নেত্রীকে গর্জে উঠতে দেখা গেলো না। কার্যত বাম কং শূন্য বিধানসভা এফেক্ট! যে আক্ষেপের সুর বিধানসভার আঙিনাতে গিয়ে বহুবার শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে।

মমতার গলায় নেই বাম কং বিরোধিতা। যা যথেষ্ট অর্থবহ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে জাতীয় রাজনীতির নিরিখে। কারণ মমতার লক্ষ্য চব্বিশে বিজেপি হঠিয়ে দিল্লির মসনদ দখল। তাই বিরোধী একাট্টা না হলে সেই লক্ষ্য তৃণমূলের মত আঞ্চলিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। এই কারণে দেশজুড়ে বিস্তারেও নেমেছে টি এম সি। আর তাই ঘটা করে একুশে জুলাই পালন কড়া হয়েছে প্রায় দেশ জুড়ে। তাই এবারে একুশে জুলাই মঞ্চে মমতার নিশানা থেকে রেহাই পেলো জগাই মাধাই অর্থাৎ বাম কং।

অন্যদিকে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ভোটের ফলাফলের নিরিখে বাম কং এর অস্তিত্ব সংকটে। তাই তাদের বিরুদ্ধে বাক্য খরচ বৃথা। নেত্রী তা ভালই বুঝেছেন। এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাই এদিন পুরো ফোকাস ছিলো বিজেপি। কেন্দ্রীয় ইস্যু থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সব ক্ষেত্রেই বিজেপি নিশানা করা হয়েছে। এদিন দিল্লিতে তৃণমূল নেত্রীর একুশে সমাবেশের ভাষণ শুনতে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন পি চিদম্বরম সহ দিগ্বিজয় সিংয়ের মতো বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতারাও।

উল্লেখ্য, রাজ্য রাজনীতিতে শক্তি হারালেও জাতীয় রাজনীতিতে বাম এবং কংগ্রেস দুই শিবিরই এখনও অন্যতম শক্তি। বিজেপি বিরোধী সব দলের সঙ্গেই কম বেশি সখ্যতা বজায় আছে এই দুই দলের। ফলে দিল্লির লড়াইতে বাম কং এর একান্ত সহযোগিতা প্রয়োজন। অন্যদিকে ত্রিপুরায় হাত বাড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছে তৃণমূল। সেখানেও বামেদের ঘাঁটি ছিলো এক সময়। তাই সে রাজ্যে পাড়ি জমাতে গেলে পুরনো সিপিএম এর সহযোগিতা প্রয়োজন।

এদিকে কংগ্রেস দলের সঙ্গে অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির সুসম্পর্ক বজায় আছে। যা কাজে লাগতে পারে চব্বিশ এ বিজেপি হঠাও অভিযানে। সম্ভবত সেকারণেই একুশের মঞ্চে সেভাবে বাম-কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে শোনা গেল না তৃণমূল নেত্রীকে। উলটে পরোক্ষে বামেদের এবং কংগ্রেসকে বিজেপি বিরোধী ফ্রন্টে স্বাগত জানালেন মমতা। জানিয়ে দিলেন, করোনা কমলে যে ব্রিগেড সমাবেশ তিনি করবেন, তাতে কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধী এবং কেরলের পিনারাই বিজয়নকে স্বাগত জানানো হবে। তাই সব দিক খোলা রেখেই রাজনীতি করতে চান মমতা।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in