KMC Poll 21: বাম বনাম তৃণমূল ইস্তেহার - পুর পরিষেবা ও প্রতিশ্রুতি ঘিরে প্রশ্ন অনেক

ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মতামত অনুযায়ী প্রকাশিত ইস্তেহারে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল বস্তিবাসী সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে ভাবনাহীন। ২০১৫ ও ২০২১-এর ইস্তেহার পাশাপাশি রাখলে এই অভিমুখ বদল স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশ
তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশ ছবি এআইটিএমসি ফেসবুক পেজের সৌজন্যে
Published on

কলকাতায় কি বস্তিবাসী আছেন? কলকাতায় কি সংখ্যালঘু আছেন? মডেল বস্তি আছে? কলকাতা পুরসভার নির্বাচনের আগে তৃণমূল যে ইস্তেহার প্রকাশ করেছে, তা একপ্রকার বিজেপি মডেল অনুসরণ করে। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মতামত অনুযায়ী প্রকাশিত ইস্তেহারে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল বস্তিবাসী সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে ভাবনাহীন। ২০১৫ ও ২০২১-এর ইস্তেহার পাশাপাশি রাখলে এই অভিমুখ বদল স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তৃণমূলের ২০১৫ সালের ২০ তম পৃষ্ঠায় বস্তি প্রসঙ্গে একাধিক কথা বলা হয়েছিলো।

দিন কয়েক আগেই প্রকাশিত হয়েছে বামেদের ইস্তেহার। যেখানে বলা হয়েছে, 'খাদে পড়ার আগে স্টিয়ারিং বাঁদিকে ঘুরিয়ে দিন'। যে ইস্তেহারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বস্তি উন্নয়নে। বলা হয়েছে, গরিব, নিম্নবিত্ত মানুষদের পৌরকর, ট্রেড লাইসেন্স, বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান, বিদ্যুতের বিলের ক্ষেত্রে সম্ভাব‍্য‍ ছাড় ও ভর্তুকি দেওয়া হবে। অথচ তৃণমূলের ইস্তেহারে বস্তির কথা কোথাও লেখা নেই। গত দশ বছরে তৃণমূল নেতারা দামি দামি গাড়ি বাড়ি করে ফেলেছেন বলেই নিন্দুকেরা বলেন। যাঁরা বস্তির ধারে কাছেও যান না। বস্তির জমি দখল হচ্ছে। বস্তি উচ্ছেদ হয়েছে। ২০১০, ২০১৫র ইস্তেহারে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বস্তি নিয়ে প্রচুর শব্দ লিখেছিলেন।

এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের টিমের ইস্তেহারে বস্তি নিয়ে একটা কথাও নেই। শুধু লেখা হয়েছে দরিদ্র পল্লি। মডেল দরিদ্র পল্লির উদ্যোগ। মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাত্রা সুনিশ্চিত করতে সুলভ শৌচালয়, আচ্ছাদিত নর্দমা, নিয়মিত জল সরবরাহ, উচ্চ বাতিস্তম্ভের সুবিধার মাধ্যমে দরিদ্র পল্লির অঞ্চল ভিত্তিক চিহ্নিতকরণ ও নাগরিক সুবিধার মানোন্নয়ন। কয়েক লক্ষ বস্তিবাসীকে নিয়ে কোনও উন্নয়নের কথা দশদিগন্ত ইস্তেহারে নেই। অর্থাৎ বামফ্রন্টের আমলে বস্তির উন্নয়ন ও তৃণমূলের আমলে বস্তি উচ্ছেদ করে উন্নয়নের মধ্যে দ্বন্দ্ব রইল।

এই দরিদ্র পল্লিতে বেশিরভাগেরই শৌচাগার নেই। গত ১০ বছরে তৃণমূল তা বানাতে পারেনি। মডেল দরিদ্র পল্লির উদ্যোগ অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে উন্নয়ন হয়নি। ২০১৫ ইস্তেহারে মমতা বলেছিলেন, মডেল বস্তি উন্নয়ন হয়ে গিয়েছে। আর এবার বলছেন উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ছ'বছর আগে হওয়া নির্বাচনের ইস্তেহারে স্বাস্থ্য বিষয়ে লেখা হয়েছিল, দুটি ১০০ শয্যার হাসপাতাল, কমিউনিটি হেলথ সেন্টার তৈরি হবে। এবার আর কোনও উল্লেখ নেই। গত ৫ বছরে কোনও হাসপাতাল করেনি তৃণমূল। কোথায় জল জমেছে, আবর্জনা জমেছে, তা খুঁজতে তিন হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সিসিটিভিগুলি কোথায়, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

এছাড়াও শহর ডেঙ্গু মুক্ত করার ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অথচ এখনও সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা স্পষ্ট। এ কথাটা পরিষ্কার, যা যা হয়নি, প্রশান্ত কিশোরের ইশতেহারে সেসবের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জলাভূমির সংস্কার ও সংরক্ষণের কোনও বিষয় উল্লেখ নেই।

উল্লেখ নেই সংখ্যালঘু উন্নয়নের বিষয়টিও। উর্দু মাধ্যমিক স্কুলের উন্নয়ন, সংখ্যালঘুদের কাজের বিষয়ে তৃণমূল গত ১০ বছরে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এবার সে প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশ
KMC Poll: খাদে পড়ার আগে স্টিয়ারিং বাঁদিকে ঘুরিয়ে দিন - পুর-ইস্তেহারে কলকাতাবাসীকে বার্তা বামেদের

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in