

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সদ্য প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীদের তালিকা। আর সেখানেই নাম রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ জন গবেষকদের। তবে, প্রশংসার পাশাপাশি এতটা পথ পেরোতে ঠিক কী কী বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে, পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে অকপটে জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ড: নন্দিনী মুখোপাধ্যায়।
সাম্প্রতিককালে চরম আর্থিক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। যত দিন যাচ্ছে ততই কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারই আর্থিক সাহায্যের হাত সংকুচিত করছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতেও বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় নিজেদের জায়গা করে নেওয়া কম কৃতিত্বের নয়।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক নন্দিনী মুখোপাধ্যায় জানান, নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে এই খবরটি অত্যন্ত গৌরবময় ও সম্মানের। তবে, মূল সমস্যা হল স্টেট ইউনিভার্সিটিগুলিতে যারা শিক্ষকতা বা গবেষণা করছেন, তাঁদের গবেষণা করার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ খুবই সীমিত। তার মধ্যেও অত্যন্ত কষ্ট করেই তাঁরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শেষ ১০-১১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের অবস্থাও শোচনীয়, অর্থের পরিমাণ ক্রমশ কমেছে।
অধ্যাপক আরও জানান, আগে গবেষণা এবং বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজের সুবিধার্থে বড় পরিকাঠামো তৈরীর ক্ষেত্রে ৫ বছরের পরিকল্পনামাফিক কিছু অর্থ বরাদ্দ করা হত। নীতি আয়োগ আসার পর সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকার গবেষণার পরিসরটাও খুব সীমিত করে দিয়েছে। শিক্ষকরা বিভিন্ন প্রোজেক্ট লিখে যে টাকা পেতেন সেটাও এখন কম।
শিক্ষাক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি আরোপের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিদেশ এবং আইআইটিগুলো সমমানে পৌঁছালেও তাদের তুলনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার যন্ত্রপাতি, রিসার্চ স্কলার অনেক কম। রাজ্য সরকারও আমাদের কোনওরকম সাহায্য করে না। আবার কেন্দ্র থেকে যে অর্থসাহায্য আসত সেটাও ক্রমশ কমে আসছে। সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য এটা কেন্দ্র এবং রাজ্যের মিলিত চক্রান্ত। দুই সরকার একই অভিমুখে চলছে।
এর পাশাপাশি, সম্প্রতি অমিত শাহের সরকারি ভাষা সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে হিন্দিকে শিক্ষার প্রধান মাধ্যম হিসেবে প্রাধান্য দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছেন যাদবপুরের অধ্যাপক। তাঁর মতে, শিক্ষা সর্বদা মাতৃভাষার মাধ্যমে হওয়া উচিত। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষত বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির বেশিরভাগ বই ইংরেজিতে লেখা। ওরা নিজেরাই দুরকম কথা বলছে। একদিকে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী বলছে মাতৃভাষা হবে শিক্ষার মাধ্যম, অন্যদিকে জোর করে হিন্দি চাপাতে চাইছে। আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন