

ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে যোশীমঠ (Joshimath)। প্রতি বছর ৬.৫ সেমি বা আড়াই ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠসহ সংলগ্ন এলাকা। গত বছর এক সমীক্ষায় এমনই দাবি করেছিল দেরাদুনের সরকারি সংস্থা - ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং (Indian Institute of Remote Sensing)।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম NDTV জানিয়েছে, ২০২০-র মার্চ থেকে শুরু করে ২০২২-র জুলাই পর্যন্ত উপগ্রহচিত্র (Satellite Picture) বিশ্লেষণ করেছে ওই সংস্থা। তাতে যোশীমঠ এবং তার আশপাশের এলাকার পাহাড়ে একাধিক ফাটল দেখা গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও যোশীমঠের তপোবন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ বন্ধ রাখেনি ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন বা NTPC। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সমানে চলেছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্বপ্নের চারধাম সড়ক প্রকল্পের (Char Dham Roads Project) কাজও চলেছে সমানতালে। এর জন্য পাহাড় কেটে, গাছ কেটে চলেছে রাস্তা তৈরির কাজ। আর, এই দুয়ের জেরেই যোশীমঠ সহ সংলগ্ন এলাকা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা যাচ্ছে, যোশীমঠের ১১০ টিরও বেশি পরিবার নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। পুরো শহরটিকেই খালি করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি এবং বহুতল হোটেলগুলি। তবে, স্থানীয় মানুষ বা হোটেল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাঁদেরকে কোনোও নোটিশ না দিয়েই বুলডোজার চালানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। এমনকি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।
ঠাকুর সিং রানা নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, 'আমার দুটি হোটেলে আংশিক ফাটল দেখা দিয়েছিল। দুটিকেই বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। যদি জনস্বার্থে এটি করা হয়, তাহলে ঠিক আছে। তবে, তার আগে আমাকে নোটিশ দেওয়া উচিত ছিল।'
এরইমাঝে জানা গেছে, চলমান বিপর্যয় শুধুমাত্র যোশীমঠের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কর্ণপ্রয়াগের বহুগুনা নগরেও ফাটল দেখা দিয়েছে। গত কয়েক মাসে অন্তত ৫০ টি বাড়িতে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কর্ণপ্রয়াগ অঞ্চলের বাসিন্দা পঙ্কজ দিমরি (Pankaj Dimri) বলেন, 'আশেপাশের গ্রাম থেকে অনেক মানুষের আগমনের ফলে শহরের জনসংখ্যা বেড়েছে। প্রতি বর্ষায় এখানকার কিছু বাড়ি ডুবে যায়। ২০২১ সালে চারধাম প্রকল্পের জন্য কর্ণপ্রয়াগ সংলগ্ন পাহাড়গুলিকে অবৈজ্ঞানিকভাবে কাটা হয়েছিল। এর ফলে ফাটল তৈরি হয়েছে। কিছু বাসিন্দাকে ইতিমধ্যেই তাঁদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে।'
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন