Editors Guild: টিভি চ্যানেলগুলির দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে দেশের মাথা হেঁট হচ্ছে, ক্ষোভ প্রকাশ গিল্ডের

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম বা চ্যানেলের অনেকেই নিজেদের 'গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ' বলে দাবি করে থাকে। সাম্প্রতিককালে এবার তাদেরই একাংশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে Editors Guild of India।
ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকী গ্রাফিক্স সুমিত্রা নন্দন

ন্যাশনাল মিডিয়া মানে - সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম বা চ্যানেল। যাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের 'গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ' (Fourth Pillar of Democracy) বলে দাবি করে থাকে। সাম্প্রতিককালে এবার তাদেরই একাংশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে 'এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া' (Editors Guild of India)।

বুধবার, এক প্রেস বিবৃতিতে গিল্ড জানিয়েছে, 'কিছু সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে উদ্বিগ্ন এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করছে, যেখানে একটি দুর্বল সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে তাদের প্রতি এবং তাদের বিশ্বাসের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে।'

দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং সর্বোপরি জনগণের স্বার্থে গঠনমূলক আলোচনার বিস্তার ঘটানোর দায়িত্ব পালন করতে হয় সংবাদমাধ্যমকে। এমনকি, দাঙ্গা বা গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলাকালে সংবাদ পরিবেশন বা বিতর্ক, আলোচনার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা নিতে হয়।

সম্প্রতি, টেলিভিশন বিতর্কে বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা যেভাবে হজরত মহম্মদকে নিয়ে 'অবমাননাকর' মন্তব্য করেছেন, তাতে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ধাক্কা খেয়েছে। যা, ভারতীয়দের সম্মানে ঘা দিয়েছে। এরপরেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে ভারতে টেলিভিশন চ্যানেলের ভূমিকা নিয়ে। বিতর্কসভায় আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে।

এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া'র প্রেস বিবৃতি সেকথাও তুলে ধরা হয়েছে এদিন। বলা হয়েছে, 'শাসক দলের মুখপাত্রদের মন্তব্য এবং তা ঘিরে কানপুরে যে দাঙ্গা হয়েছে, প্রত্যাশিতভাবে তাতে অনেক দেশই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ক্ষোভের সুরে তারা বিবৃতিতে, মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি ভারতের যে প্রতিশ্রুতি আছে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।'

একইসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'যদি টেলিভিশন চ্যানেলগুলি ভারতীয় সংবিধানে বিধিবদ্ধ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতার নীতি ও প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া'র (PCI) নির্দেশিকাগুলিকে মেনে চলত, তাহলে যে ঘটনা দেশকে অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের মধ্যে ফেলেছে, তা এড়ানো যেত।'

কিন্তু, তা না করে ভিন্ন পথে হাঁটছে একাধিক টেলিভিশন চ্যানেল। তা তুলে ধরে এডিটরস গিল্ড এদিন জানিয়েছে,'দর্শকসংখ্যা এবং মুনাফা বাড়ানোর আকাঙ্ক্ষায় সবকিছু বিসর্জন দিচ্ছে এই চ্যানেলগুলি। আপাতদৃষ্টিতে এই চ্যানেলগুলি রেডিও রোয়ান্ডার দ্বারা অনুপ্রাণিত, যে রেডিও চ্যানেলের খবর সম্প্রচারের কারণে একদা আফ্রিকার দেশে গণহত্যা ঘটেছিল।'

এরপরেই 'বিভাজন সৃষ্টিকারী' এই চ্যানেলগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে এডিটরস গিল্ড (EGI) -এর পক্ষ থেকে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এই চ্যানেলগুলি যেভাবে বিভাজনমূলক এবং বিদ্বেষসূচক কণ্ঠস্বরকে বৈধতা দিচ্ছে, তা অবিলম্বে থামানো প্রয়োজন। কেননা, জাতীয় পর্যায়ে এই ধরনের আলোচনা সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে প্রকট করে তুলেছে।'

একইসঙ্গে এডিটরস গিল্ড-এর সভাপতি সীমা মোস্তফা এবং সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কাপুর দাবি জানিয়েছেন,'এই ধরনের ঘটনা (বিদ্বেষ মূলক বিতর্ক আলোচনা)-র পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য সম্প্রচার সংস্থা এবং সাংবাদিক সংস্থাগুলিকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। দায়িত্বহীনতার জন্য চ্যানেলগুলি যাতে জবাবদিহি করতে পারে, তার জন্য আইন কঠোরভাবে বলবত করতে হবে।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in