Dawood Ibrahim: দাউদ ইব্রাহিমকে বিষ প্রয়োগ করার খবর আদৌ সত্যি, নাকি নিছক গুজব?

People's Reporter: সোমবার সকালেই খবর ছড়িয়ে পড়ে করাচীতে বসবাসকারী আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমকে কোনও এক অজানা ব্যক্তি বিষ প্রয়োগ করেছেন ও তাঁকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দাউদ ইব্রাহিম
দাউদ ইব্রাহিম ফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন এবং পলাতক সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম কাসকারের সন্দেহভাজন বিষক্রিয়া সম্পর্কে অনুমানমূলক খবর এবং গুজব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ঝড় তুলেছে। সোমবার সকাল থেকেই মূলধারার প্রায় সব সংবাদমাধ্যমে এই খবর শিরোনামে আছে। যদিও এই খবর আদৌ সত্যি কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয় এবং এই গুজবের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতার অনেক অভাব আছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সোমবার সকাল থেকেই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে করাচীতে বসবাসকারী আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমকে কোনও এক "অজানা ব্যক্তি" বিষ প্রয়োগ করেছেন এবং তাঁকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই খবরেই আরও দাবি করা হয়, যে ৬৭ বছর বয়সী দাউদ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী এবং তাঁর তিন কন্যা এবং এক পুত্রের সাথে করাচিতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এবং জনসাধারণের থেকে দূরে বসবাস করেন। ওই সূত্র থেকেই আরও দাবি করা হয় যে দাউদকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এই গুজব অথবা খবরকে পাকিস্তানের কোনও নির্ভরযোগ্য সূত্র এখনও নিশ্চিত করেনি। যদিও এই বিষয়ে কিছু বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে।

প্রথমত, দাউদ ইব্রাহিম করাচিতে বা পাকিস্তানের অন্য কোনো অংশে থাকেন, ভারতের এই দাবি পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে বারবার অস্বীকার করেছে। সেইকারণেই এই ঘটনা সত্যি হলেও পাকিস্তানি কোনও সংবাদমাধ্যমের পক্ষে তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

যদি এই গুজবকে সত্যি বলে ধরে নেওয়া হয় যে দাউদকে এক অজানা ব্যক্তি বিষ দিয়েছেন সেক্ষেত্রেও এই দাবি মেনে নেওয়া কিছুটা অসম্ভব। তিনি একজন আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন এবং ভারতের জন্য মোস্ট ওয়ান্টেড একজন হলেও কিছু প্রশ্ন থেকেই যায়।

নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুসারে, দাউদের কাছে কোনো অজানা অচেনা ব্যক্তির প্রবেশাধিকার পাওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ তিনি তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্যক্তি, পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তারক্ষী দ্বারা বেষ্টিত থাকেন এবং তাঁরা দাউদের সুরক্ষিত থাকা নিশ্চিত করে।

সূত্র অনুসারে, “দাউদ ইব্রাহিমের কাছে এত সহজে পৌঁছে যাওয়া যে কোনও ব্যক্তির পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তিনি তাঁর বিশ্বস্ত নিরাপত্তারক্ষী দ্বারা পরিবৃত থাকেন এবং এমনকি যদি তিনি করাচি বা অন্য কোথাও থাকেন, সেক্ষেত্রেও তাঁকে নিরাপদে রাখার সমস্তরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তাই একজন অচেনা ব্যক্তি তাঁকে বিষ খাইয়ে দেবেন বিষয়টা সহজে মান্যতা পায় না।"

দাউদ ইব্রাহিম এখন বৃদ্ধ। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬৭ বছর এবং তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যা আছে। বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে তাঁর স্বাস্থ্য বজায় রাখতে হয়। গুজবের কোনো অংশকে যদি সত্য বলে বিশ্বাস করা হয় সেক্ষেত্রে কিছু শারীরিক কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন।

করাচিতে দাউদের উপস্থিতি সম্পর্কে ভারত দীর্ঘদিন যে দাবি জানিয়ে আসছে, সেই দাবির সপক্ষে জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কাছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেওয়া বিবৃতি উল্লেখযোগ্য।

জানুয়ারী ২০২৩-এ, দাউদের বোনের ছেলে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে (এনআইএ) নিশ্চিত করেছেন যে দাউদ পাকিস্তানে পুনরায় বিয়ে করেছেন এবং করাচিতে তাঁর পরিবারের সাথে বসবাস করছেন।

দাউদ ইব্রাহিমের বোন হাসিনা পারকারের ছেলে আলি শাহ পারকার গত বছরের নভেম্বরে এনআইএ-কে জানিয়েছিলেন, “দাউদ ইব্রাহিমের দ্বিতীয় স্ত্রী আছেন। তাঁর নাম মাইজাবিন। তাঁর তিন মেয়ে মারুখ, মেহরিন এবং মারিয়া এবং এক ছেলে মহিন নওয়াজ।”

ভারত দৃঢ়ভাবে দাবি করে যে দাউদ ইব্রাহিম গত কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানে বসবাস করছেন, এবং ভারতের আরও দাবি যে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ দাউদকে যথাযথ সুরক্ষা এবং গোপন আশ্রয় দিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তান দাউদের উপস্থিতি স্বীকার করেনা।

একজন মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত দাউদ ইব্রাহিম, ভারতের মুম্বাই এবং অন্যত্র একাধিক অপরাধ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদকদ্রব্যর ব্যবসা ইত্যাদির সাথে জড়িত। যে কারণে দাউদকে নিজেদের হেফাজতে চায় ভারত।

যে প্রধান মামলাগুলির জন্য ভারত দাউদকে হাতে পেতে চায় তার মধ্যে রয়েছে মার্চ ১২, ১৯৯৩ সালের মুম্বাই সিরিজ বিস্ফোরণ - যা ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। যে ঘটনায় ২৬৭ জনের মৃত্যু হয় এবং ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ১৬৬ জনের চেয়ে এই সংখ্যা অনেকটাই বেশি।

দাউদ ইব্রাহিম
NCRB Report: রাষ্ট্রবিরোধী কাজ নিয়ে মামলা দায়েরের তালিকায় শীর্ষে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ
দাউদ ইব্রাহিম
Jammu & Kashmir: রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও উপত্যকায় প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ বিজেপি

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in