Economy: ৮.৩% বৃদ্ধি পাবে ভারতের অর্থনীতি, হবে দ্বিতীয় দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতি

বিশ্বব্যাংকের মতে, ভারতের অর্থনীতি চলতি অর্থবছরে ৮.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা। ফলে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিতে পরিণত হবে।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক
বিশ্ব ব্যাঙ্ক ফাইল ছবি সংগৃহীত

বিশ্বব্যাংকের মতে, ভারতের অর্থনীতি চলতি অর্থবছরে ৮.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা। ফলে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিতে পরিণত হবে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক আপডেটে বলা হয়েছে যে ভারতে কোভিড ১৯এর "মারাত্মক দ্বিতীয় ঢেউ"-এর পর "টিকাকরণের গতি, যা ক্রমবর্ধমান, চলতি বছর এবং তার পরেও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নির্ধারণ করবে"।

রিপোর্টে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, "হার্ড ইমিউনিটি অর্জন না করা পর্যন্ত অতিমারির গতিবিধি পূর্বাভাসে নিকট ভবিষ্যতে প্রভাব ফেলবে।"

আগামী সপ্তাহে ব্যাংকের বার্ষিক বৈঠক। তার আগে জারি করা আপডেট অনুযায়ী, ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) - যা গত অর্থবছরে অতিমারির আক্রমণে ৭.৩ শতাংশ (অর্থাৎ - ৭.৩ শতাংশ) সংকুচিত হয়েছে - চলতি অর্থবছরে তা ৮.৩শতাংশ হারে বাড়বে বলে আশা। আগামী বছর এই হার কিছুটা কমে ৭.৫ শতাংশ এবং ২০২৩-২৪এ ৬.৫ শতাংশ হবে।

প্রধান অর্থনীতিগুলিরর মধ্যে, চীনে চলতি বছরে ৮.৫ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির আশা। এপ্রিল মাসে ৮.১শতাংশের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। পরে ব্যাঙ্ক তার পুনর্মূল্যায়ন করে বাড়িয়েছে।

চীনের বৃদ্ধির হার আগামী বছর ৫.৪শতাংশে নামবে এবং ২০২৩ সালে ৫.৩ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গত বছর বৃদ্ধি ঘটেছিল ২.৩শতাংশ হারে।

সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য, ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস,এ বছর ও আগামী বছর জিডিপি বৃদ্ধির হার হবে ৭.১ শতাংশ ।

মালদ্বীপের ৩.৮বিলিয়ন ডলারের অতি ক্ষুদ্র অর্থনীতি যা গত বছরে পড়েছিল বিশাল মাপে ৩৩.৬ শতাংশ হারে। এই বছর ঘুরে দাঁড়িয়ে ২২.৩শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী বছর এটি ১১ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ১২ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশের ৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছিল। আগামী বছর ৬.৪ শতাংশ এবং পরের বছর ৬.৯শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের অর্থনীতি যা গত অর্থবছরে ৩.৫শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল, তা এই বছর ৩.৪শতাংশ এবং আগামী বছর ৪শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্যাঙ্কের আশা শ্রীলঙ্কায় এই বছরে ৩.৩শতাংশ হারে বৃদ্ধি হবে। গত বছর যা হ্রাস পেয়েছিল ৬.৬শতাংশ হারে। আগামী বছর ২.১ শতাংশ এবং পরের বছর ২.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে।

গত অর্থবছরে ভুটানের ১.২ শতাংশ হারে নেতিবাচক বৃদ্ধি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে ৩.৬ শতাংশ এবং পরের বছরে ৪.৩ শতাংশে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নেপালের বৃদ্ধি গত অর্থবছরের ১.৮শতাংশ থেকে চলতি অর্থবছরে ৩.৯ শতাংশ এবং পরের বছর ৪.৭ শতাংশে ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্যাঙ্ক বলেছে, "কোভিড ১৯ অতিমারি সুপরিকল্পিত আর্থিক এবং মুদ্রা নীতির সমর্থন সত্ত্বেও ২১ অর্থবছরে (অর্থবছর ২০২০-২১) -এ ভারতের অর্থনীতিতে গভীর সংকোচন ঘটায়।"

বলা হয়েছে যে গত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে বৃদ্ধির পুনরুদ্ধার হয় "প্রাথমিক ভাবে বিনিয়োগ ও অর্থনীতির আনলকিং এর সাহায্যে এবং উদ্দিষ্ট আর্থিক, মুদ্রা ও নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার মাধ্যমে। উৎপাদন ও নির্মাণ শিল্প ঘুরে দাঁড়ায় নিশ্চিতভাবে।"

রিপোর্টে বলা হয়েছে যদিও ভারতে এই বছর অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, ২০২০ সালে প্রথম ঢেউয়ের তুলনায়, "স্থানীয়স্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকে অর্থনীতি সামান্যই ব্যাহত হয়, "চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি ২০.১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০২০-২১ এর প্রথম ত্রৈমাসিকের তুলনায়।

এই বৃদ্ধিকে "একটি উল্লেখযোগ্য মৌলিক প্রভাবের" (অর্থাৎ যা তুলনামূলক ত্রৈমাসিকের খুব বড় পতন থেকে উঠে এসেছে)," রপ্তানি বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদার সীমিত ক্ষতির" অবদান বলা হয়েছে।

ব্যাঙ্কের আপডেটে আগামীদিন সম্পর্কে বলা হয়েছে যে "কৃষি ও শ্রম সংস্কারের সফল রূপায়ণ মধ্যমেয়াদী বৃদ্ধিকে বাড়িয়ে তুলবে"। পাশাপাশি সতর্ক করে দিয়েছে যে "দুর্বল পরিবার ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এটিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।"

বলা হয়েছে উৎপাদন শিল্প বাড়াতে উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহভাতা প্রকল্প, এবং পরিকল্পিত সরকারী বিনিয়োগে দেশীয় চাহিদা বাড়াবে।

চলতি অর্থবছরে পুনরুদ্ধারের ব্যাপ্তি "নির্ভর করবে কত দ্রুত পরিবারের আয় বাড়বে এবং অসংগঠিত ক্ষেত্র এবং ছোট সংস্থাগুলির কাজকর্ম স্বাভাবিক হবে।" তার উপর।

ঝুঁকির মধ্যে আছে আর্থিক ক্ষেত্রের চাপ আরও বৃদ্ধি পাওয়া,মুদ্রানীতির সহায়তায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারী প্রত্যাশার তুলনায় বেশি মুদ্রাস্ফীতি,এবং টিকাকরণ কম হওয়া।

অতিমারির প্রভাবের বিবেচনা করে ব্যাংক বলেছে, "সংকটের হিসাব সমান নয়, এবং এখনও পর্যন্ত পুনরুদ্ধার ঘটেছে অসমানভাবে, কম দক্ষ, মহিলা, স্বনিযুক্ত এবং ছোট সংস্থাগুলির মতো সমাজের সবচেয়ে দুর্বল শ্রেণী পিছিয়ে পড়েছে।"

কিন্তু এও বলা হয়েছে যে, ভারত সরকার সামাজিক নিরাপত্তাজাল শক্তিশালী করতে এবং বৈষমাই দূর করতে কৃষি ও শ্রম সংস্কারের মাধ্যমে কাঠামোগত সরবরাহের সীমাবদ্ধতা কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে ।

বলা হয়েছে যে সরকার স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। অতিমারির ফলে সামনে আসা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং সামাজিক সুরক্ষা জালের (বিশেষত শহুরে এলাকা এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে) দুর্বলতাগুলির মোকাবিলা শুরু করেছে।

- with Agency Inputs

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in