করোনা মহামারী, মহামারীকাল শিক্ষাব্যবস্থা, গণতন্ত্র ও সংবিধান, আলোচনার মাধ্যমে গরিব মানুষকে উদ্ধার করার উপায় নিয়ে বলতে শোনা গিয়েছে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহামারীকালে দেশের মানুষের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে এই বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ।
কোভিড আবহে ভার্চুয়াল শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ। শিক্ষার্থীদের সামনাসামনি বসেই পড়াতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন তিনি বলে জানিয়েছেন। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে যে পড়াশোনার আবহ ছিল, তাতে আমলাতন্ত্র ঢুকে যাওয়ায় আদতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান পড়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, শান্তিনিকেতনে পড়াশোনার পরিবেশ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হয়েছেন। কিন্তু তিনি যদি পড়ুয়াদের স্বাধীনতাকে উৎসাহ দিতেন, তাহলে কোনও চিন্তার কথা ছিল না। কিন্তু আদতে তা হচ্ছে না। আমলাতন্ত্রের চাপে বিশ্ববিদ্যালয় নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই হয়ে গিয়েছে এখন শান্তিনিকেতন।
আসলে দেশে এখন গণতন্ত্র বিপন্ন। সবসময় মনে রাখা উচিত, গণতন্ত্র মানেই শুধু ভোটদান নয়। উন্মুক্ত মন ও বাকস্বাধীনতা এবং নিজের মতামত ব্যক্ত করাও গণতন্ত্র। ১৯৪৩ সালে যখন বাংলায় দুর্ভিক্ষ আছড়ে পড়েছিল, তখন পরিস্থিতি নিয়ে কখনও আলোচনা করা হয়নি। তখন বাংলার দুর্ভিক্ষ নিয়ে কথা বললেই জেল হয়ে যেত।
তিনি আরও বলেন- এখন সাধারণের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক বিষয়। কিন্তু, আলোচনার বিষয়বস্তু সবসময়ই সকলের জন্য খাদ্য, নিয়ন্ত্রিত দামে খাদ্যশস্য বিক্রি হওয়া উচিত। কিন্তু তেমনটা হচ্ছে না বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।