১ বছর আগেই দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তদন্ত হয়নি কেন? উঠছে প্রশ্ন

গতবছর মার্চ মাসে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় প্রতারক, ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল। সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিল সে।
বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে দেবাঞ্জন
বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে দেবাঞ্জনফাইল চিত্র

এই মুহূর্তে কলকাতা শহরের সবচেয়ে আলোচিত নাম দেবাঞ্জন দেব। তবে ২০২১ নয়, গত বছর এই নাম আলোড়ন ফেলতে পারত। তার প্রতারণার নানা ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়ে তদন্ত হয়নি। গতবছর মার্চ মাসে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় প্রতারক, ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল। সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিল সে। নিজেকে কলকাতা পুরনিগমের যুগ্ম কমিশনার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। প্রতারকের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে থানায় ডেকে জেরা করা হয়। তখনই বোঝা যায় যে দেবাঞ্জন আদতে জালিয়াতির কারবারের সঙ্গে যুক্ত।

এখানে উঠছে প্রশ্ন। যুগ্ম-কমিশনার, যুগ্মসচিব এই সব ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে কেন কোনও এফআইআর দায়ের হল না? গ্রেফতার তো দূরের কথা, তাকে আটকও করা হয়নি। এমনকী কোনও অভিযোগ লিখিতভাবে নেওয়া হয়নি। তাহলে কি প্রভাবশালী মহলের তৎপরতার ছাড়া পেয়েছিল দেবাঞ্জন? শাসক দলের কোনও নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে একই ভাবে ঘুরে বেড়াতে পেরেছে সে?

২০২০ সালে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের, ২০২১ সালের সেই তার সঙ্গেই সরকারি অনুষ্ঠানে নেতা মন্ত্রীরা! তবে এই ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের সঙ্গে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই বলে উল্লেখ করে মমতা বন্দোপাধ্যায় দাবি করেছেন, কলকাতা পুলিশ ও কর্পোরেশন দায়িত্ব এড়াতে পারে না। শাসক দল এবং পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এই ভাবে জালিয়াতি করা সম্ভব নয়, এটা মানছেন পুরসভার কর্তারাও।

কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তকারী অফিসারদের সামনে নতুন তত্ত্ব এসেছে। ২০২০ সালের অক্টোবরে অশোক রায় নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে কসবার এই অফিসটি ভাড়া নেওয়া হয়। এই অফিস ভাড়া নিতে সাহায্য করে কসবার বিধায়ক জাভেদ খানের ঘনিষ্ঠ নেতা রবিন দাস। গত কয়েকদিন ধরে দেবাঞ্জননের অফিসে একাধিক কর্মী, নিরাপত্তারক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

কলকাতা করপোরেশনের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ইন্দ্রাণী সাহা নিজেও স্বীকার করেছেন যে ৬ মাস আগে তিনি এই প্রতারণার খবর জানতেন। দেবাঞ্জন প্রতারক, যদিও তার সুপারিশে তালতলার অফিসে তৃণমূল কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। তদন্ত চলছে অভিযুক্তের বাড়ি, অফিস কেন্দ্র করে। তাহলে কি কোনও ভাবে শাসকদলের যোগসূত্রের ছবিটিকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে, প্রশ্ন উঠছে।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in