
ছোটবেলায় পড়া সেই ছোট্ট হান্সের উপস্থিত বুদ্ধির কথা মনে আছে? যে একাই সারারাত বাঁধের ফাটলে হাত ঢুকিয়ে বসে থেকে গোটা শহরকে রক্ষা করেছিল! সেই গল্পের চিত্রই যেন বাস্তব হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার জি-প্লটে।
বুধবার যশের তাণ্ডবেে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে গ্রামে। ধানের জমি, জনবসতি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। কিন্তু শুধু আশঙ্কিত হয়ে কেউ হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি। নিজেদের বাঁচাতে হাতে হাত মিলিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন নিজেরাই। কেউ মাটি ফেললেন। কেউ খড় বিছিয়ে দিলেন। আর এভাবেই বাঁধ এবং নিজেদের বাঁচালেন জি-প্লটের বাসিন্দারা।
যশের দাপট কাটতে না-কাটতেই এদিন সকালে ভরা কোটালের জলোচ্ছ্বাসে ধসে যাচ্ছিল উত্তর সীতারামপুর লঞ্চঘাট সংলগ্ন নদীবাঁধ, বাঁধ লাগোয়া ধানজমি, জনবসতি। বাসিন্দারা চিৎকার করে সতর্ক করতে শুরু করেন। খেতে জল ঢুকতেও শুরু করে দিয়েছে। কেউ ঘরের চাল বা উঠোনে খড়ের গাদা থেকে খড়ের আঁটি, কেউ প্লাস্টিক, কেউ ত্রিপল—হাতের কাছে যে যা পেলেন, নিয়ে ছুটলেন বাঁধের কাছে। কয়েকজন জমির মাটি কেটে বাঁধের ওপর ফেলতে লাগলেন। প্রায় সাতশো জন একজোট হয়ে নিজেরাই নিজেদের বাঁচলেন। বাসিন্দারা বলছেন যশ নয়, ক্ষতি করেছে জলোচ্ছ্বাস।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন- ‘এ ভাবে বাঁধ রক্ষা করা কঠিন। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমাদের অন্য কিছু ভাবার মতো সময় ছিল না।’ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের কথায়- ‘যে ভাবে সারাদিন না খেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামবাসীরা বাঁধের ধস আটকালেন, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন