Farmers Protest: কেন্দ্রের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক ব্যর্থ - দিল্লির পথে যাত্রা শুরু কৃষকদের

People's Reporter: কৃষক নেতৃত্ব জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার কৃষকদের মিছিল জাতীয় রাজধানীতে পৌঁছাবে।
কৃষকদের ডাকে দিল্লি চলো অভিযান শুরু
কৃষকদের ডাকে দিল্লি চলো অভিযান শুরুছবি প্রিয়াঙ্কা পি কে-র এক্স হ্যান্ডেলের ভিডিও থেকে স্ক্রীনশট

কেন্দ্রের সাথে পাঁচ ঘণ্টার বেশী সময় ধরে চলা আলোচনা ব্যর্থ হবার পর মঙ্গলবার সকালে দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা। সোমবার গভীর রাতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক ব্যর্থ হয়। দিল্লিমুখী বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চলে ব্যারিকেড করে কৃষকদের আটকাতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা চূড়ান্ত হবার পরেও কৃষকরা ট্র্যাক্টর, ট্রেলারে চড়ে দিল্লির অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন।

মূলত ফসলের ন্যূনতম সমর্থন মূল্য সহ একাধিক দাবিতে 'দিল্লি চলো' মিছিলের সাথে ট্রাক্টর নিয়ে কৃষকরা পাঞ্জাবের শহর এবং গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাবে। পাঞ্জাবে পুলিশের পক্ষ থেকে হাইওয়ে এবং বিভিন্ন রাস্তায় কোন অবরোধ করা হয়নি। কৃষকরা তাই মিছিল নিয়ে বিনা বাধায় হরিয়ানার দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।

সোমবার গভীররাতে কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠক ব্যর্থ হবার পর সর্বভারতীয় কৃষক ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা সর্বসম্মতিক্রমে দিল্লি যাত্রার কথা ঘোষণা করেন। কৃষক নেতৃত্ব জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার কৃষকদের মিছিল জাতীয় রাজধানীতে পৌঁছাবে।

কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে যদি তাদের দিল্লির দিকে যেতে বাধা দেওয়া হয় তবে যেখানে আটকানো হবে তারা সেখানেই বসে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।

পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশের কৃষক নেতারা সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সাথে দেখা করেন এবং বৈঠকে বসেন। যদিও দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠক থেকে কোনও সমাধানসূত্র পাওয়া যায়নি।

বৈঠক ব্যর্থ হবার পরে, সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা (অ-রাজনৈতিক) এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা ঘোষণা করেছে যে কৃষকরা তাদের দাবির জন্য মঙ্গলবার দিল্লিতে যাবে, যার মধ্যে ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) নিশ্চিত করতে একটি আইন প্রণয়ন করার দাবিও আছে। এছাড়াও, কৃষকরা স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি কৃষি ঋণ মকুবেরও দাবি জানিয়েছেন।

কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় সমাধান সূত্র না মেলার পরে, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা বলেছেন যে সরকার এখনও কৃষকদের দাবি নিয়ে আলোচনা করার জন্য দরজা খোলা রেখেছে। মুন্ডা ছাড়াও, কেন্দ্রীয় খাদ্য ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল চণ্ডীগড়ে কৃষক নেতাদের সাথে দ্বিতীয় দফা আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা সংবাদমাধ্যমে বলেন, “প্রতিটি বিষয়ে কৃষকদের সাথে একটি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সরকার আলোচনার মাধ্যমে সব সমাধান করতে চায়। আমরা কিছু বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছি। তবে কিছু সমস্যা আছে, যার স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি কমিটি করা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। আমরা আশাবাদী যে আমরা সমাধান করতে পারব। আমাদের উদ্দেশ্য হল কৃষক এবং জনসাধারণের অধিকার সুরক্ষিত করা।"

ট্রেলারে শুকনো খাদ্যসামগ্রী বোঝাই করে দিল্লিমুখী কৃষকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রতিবাদ আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখতে রসদ গুরুত্বপূর্ণ। দিল্লি চলো অভিযানের জন্য গত কয়েকদিন ধরেই গ্রামে গ্রামে তাঁরা খাবার সংগ্রহ করছেন।

দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.৫৭ শতাংশর রাজ্য পাঞ্জাব জাতীয় খাদ্য ভান্ডারে ৪০ শতাংশ খাদ্যের যোগান দেয়।

মোগা থেকে কৃষক নেতা নছাত্তার সিং বলেছেন, যতক্ষণ না কেন্দ্রীয় সরকার ২০২২ সালে কৃষকদের দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি মেনে নেবে ততক্ষণ এই মিছিল যেখানে যেখানে যাবে সেখানে সেখানে লঙ্গর পরিষেবা দেওয়া হবে। তিনি বলেন দিল্লির দিকে যাওয়ার পথে যেখানেই তাদের আটকানো হবে সেখানেই তারা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করবে।

হরিয়ানা পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্তরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

হরিয়ানা পুলিশের মুখপাত্র এবং সহকারী মহাপরিদর্শক মনীষা চৌধুরী জানিয়েছেন, "রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মোট ১১৪ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৪ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী এবং হরিয়ানা পুলিশের ৫০ কোম্পানি বাহিনী।

কৃষকরা পাতিয়ালার শম্ভু সীমান্ত, সাঙ্গুরের মুনক, মুক্তসারের ডাবওয়ালি এবং মানসার রাতিয়া থেকে হরিয়ানায় প্রবেশের পরিকল্পনা করেছেন। হরিয়ানা পুলিশ ব্যারিকেড, বোল্ডার, বালি এবং কাঁটাতারে ভরা টিপার এবং লোহার স্পাইক স্থাপন করে চারটি প্রবেশ পথ সিল করেছে। যে ঘটনায় প্রভাবিত হয়েছে যান চলাচল। দিল্লিতে বিক্ষোভ থামাতে সিঙ্গু, গাজিপুর এবং টিকরি সীমান্তেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

কৃষকদের ডাকে দিল্লি চলো অভিযান শুরু
কৃষকদের দিল্লি প্রবেশ আটকাতে রাস্তায় পোঁতা হল পেরেক, ২ স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী কারাগারে রূপান্তর
কৃষকদের ডাকে দিল্লি চলো অভিযান শুরু
Farmers Movement: কৃষকদের দিল্লি চলো আটকাতে হরিয়ানা ও দিল্লিতে তৎপরতা, একাধিক জায়গায় বন্ধ ইন্টারনেট

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in