সততাই একমাত্র পুঁজি, বিহারের চার বারের বাম বিধায়ক এখনও থাকেন কাঁচা বাড়িতে

স্ত্রী ও কন্যার সাথে নিজের বাড়িতে মেহবুব আলম
স্ত্রী ও কন্যার সাথে নিজের বাড়িতে মেহবুব আলম ছবি সংগৃহীত
Published on

জাতীয় রাজনীতি বা রাজ্যের রাজনীতি যেখানেই হোক সবক্ষেত্রে অর্থই মূল‌ বিষয়। বর্তমান রাজনীতিবিদদের অধিকাংশই অর্থ ছাড়া কিছু বোঝেন না। কিন্তু বিহারের বলরামপুর বিধানসভার চারবারের বাম বিধায়কের ক্ষেত্রে বিষয়টা খাটে না। তিনি মেহবুব আলম। আজও অ‍্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া একটি কাঁচা বাড়িতে থাকেন তিনি‌।

বর্তমানে যেখানে কোনো ব‍্যক্তি রাজনীতির খাতাতে নাম লেখানোর কয়েকদিনের মধ্যেই বড় বড় গাড়ি নিয়ে ঘোরেন, কিংবা নিজের জন্য অট্টালিকা তৈরি করেন, সেখানে ব‍্যতিক্রম সিপিআই(এমএল)-এর মেহবুব আলম। এই বাম বিধায়কের কাছে সততা ছাড়া কিছু নেই। এই সততা দিয়েই সবকিছু জয় করছেন তিনি। পরপর চারবার বিধায়ক হওয়ার পরেও যাঁর নিজের একটা পাকা বাড়ি পর্যন্ত নেই। এখনো কোথাও যেতে হলে দুই পা-ই ভরসা। হাইভোল্টেজ বিহার নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর এই মুহূর্তে সব থেকে চর্চার বিষয় মেহবুব আলম।

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন তিনি সেলিব্রিটি। এবার বিহার নির্বাচনে সব থেকে বেশি ভোট ব্যবধানে জয়ী প্রার্থী তিনি। নির্বাচনে যাঁর প্রধান পুঁজি ছিল সততা। যাঁর কাছে জনপ্রতিনিধির‌ অর্থ মানুষের ভালো করা। তাঁর একটাই চিন্তা কীভাবে মানুষের অভাব ঘোচাবেন তিনি‌। তাঁর কথায়, "আমার বিধানসভা এলাকায় অনেক মানুষ দু'বেলা পেট ভরে খেতে পায়না। অনেক কষ্ট করে খাবারের জোগাড় করতে হয় তাঁদের। আমি সেখানে বিত্ত-বৈভবে দিন কাটাব, এটা ভাবতেও পারি না।"

মেহবুব আলমের বাড়ির রাস্তাও অত্যন্ত সংকীর্ণ। একটি গাড়ি চললে আর কেউ যেতে পারবেন না। দুধারে ছোট ছোট কাঁচা বাড়ি। এর মাঝেই অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ঘরে থাকেন মেহবুব আলম। বাড়ির দেওয়াল ইটের হলেও তাতে প্লাস্টার নেই। সেই বাড়িতে তাঁর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

নির্বাচনী হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন ব্যাংকে তাঁর ৩০ হাজার টাকা রয়েছে। ৯ লক্ষ টাকার জমি রয়েছে। সেখানে তিনি চাষবাস করেন। দুই সন্তান রয়েছে তাঁর। দুজনেই সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে।

কাটিহার জেলার বলরামপুর আসনে মেহবুব আলম এবার তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিকাশশীল ইনসান পার্টির বরুণ কুমার ঝাঁকে ৫৩ হাজারেরও বেশি ভোট ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। এবারে তিনি পেয়েছেন ১ লক্ষ ৩ হাজার ৭৪৬ ভোট। তাঁর এই জয়ের পিছনে কারিগর হিসেবে সমস্ত কমরেডদের অবদান রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালের নির্বাচনেও এই আসন থেকে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। তার আগের দু'বারও জিতেছেন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in