বিহার বিধানসভা নির্বাচন: চিরাগ পাসোয়ানের একলা চলো নীতিতে বিজেপি অথবা মহাজোট - লাভবান কে?

ফাইল ছবি সংগৃহীত
ফাইল ছবি সংগৃহীত

বিহারে নির্বাচনের প্রহর যত এগিয়ে আসছে ততই কোণঠাসা হচ্ছেন চিরাগ পাসোয়ান। এনডিএ জোটে থেকেও বিধানসভা নির্বাচনে নীতিশ কুমারের বিরোধিতা করে একক শক্তিতে লড়াই করবার সিদ্ধান্ত কতটা ফলপ্রসূ তা জানা যাবে ১০ নভেম্বর। তবে জেডি(ইউ) শিবির থেকে ক্রমশ এলজেপি বিরোধী চাপ বাড়িয়ে বিজেপির কাছে বার্তা দেওয়া হচ্ছে তাতে চিরাগ পাসোয়ানের ভোটের ঝুলি আদৌ ভরবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে রাজনৈতিক মহলে।

রামবিলাস পাসোয়ানের অবর্তমানে চিরাগ পাসোয়ান আদৌ বিহার নির্বাচনের কিং মেকার হতে পারবেন কিনা তা সময়ই বলবে। বিজেপির সঙ্গে আছি কিন্তু জেডি(ইউ)-র সঙ্গে নেই – এলজেপি-র এই সিদ্ধান্তে ভোটাররা প্রভাবিত হলে তার ফল এলজেপি কতটা পাবে তা নিয়ে বড়ো প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ভোট কাটাকাটিতে জেডি(ইউ)-র ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশি। অন্যদিকে যেহেতু এলজেপি পূর্ব ঘোষণা মত বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবেনা সেক্ষেত্রে বিজেপির আসন সংখ্যা জেডি(ইউ)-র থেকে বেশি হয়ে যেতে পারে।

যে ১২২ আসনে জেডি(ইউ) এবং জিতন রাম মাঝির এইচ এ এম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সেই আসনগুলোতে এলজেপি ভোটে ভাগ বসালে লাভবান হবে বিরোধী মহাজোট। বিগত ২০১৫ নির্বাচনে জেডি(ইউ) ৭১ আসনে জয়ী হয়েও আরজেডির সঙ্গে জোটের কারণে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতিশ কুমার। আরজেডি সেবার ১০১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছিলো ৮০ আসন। কংগ্রেসের ছিলো ২৭, বিজেপির ৫৩। যেখানে ৪২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এলজেপির ছিলো মাত্র ২ আসন। প্রাপ্ত ভোটের হার ০.৮২ শতাংশ। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে জোট করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৬ আসনে জয়ী হয়েছিলো এলজেপি। প্রাপ্ত ভোটের হার ৭.৮৬%। লোকসভার প্রাপ্ত ভোটের হিসেব অনুসারে ৩৫ বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিলো এলজেপি। তবে এবারের নির্বাচনে এলজেপি ১৪৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আসন সংখ্যায় রাতারাতি খুব বেশি পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা নেই। বরং তা ৩৫-এর থেকে আরও কমবে।

২০১৫ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ছিলো ৩৭.৪৮। ১৫৭ আসনে লড়াই করে বিজেপি পেয়েছিলো ৫৩ আসন। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৭ আসনে জয়ী হলেও ভোট শতাংশের হার কমে হয় ২৩.৫৮ শতাংশ। লোকসভার প্রাপ্ত ভোট অনুসারে বিহারে ৯৬ বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিলো বিজেপি। জেডি(ইউ) এগিয়ে ছিলো ৯২ আসনে। যদিও লোকসভা ভোটের এই সমীকরণ বিধানসভা নির্বাচনে কার্যকরী হবেনা।

চিরাগ পাসোয়ানের একলা চলো রে নীতির ফলে বিজেপি লাভবান হলেও নীতিশ কুমারের যাত্রাভঙ্গ হবার সম্ভাবনা প্রবল। একইভাবে সংকটে পড়তে পারে এলজেপি ও চিরাগ পাসোয়ান। ইতিমধ্যেই এলজেপি প্রধান হুমকি দিয়েছেন নীতিশ কুমার ফের বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হলে তিনি এনডিএ ছেড়ে বিরোধী শিবিরে বসবেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে যে দলবদলের রাজনীতির সাক্ষী ভারত তাতে বিধানসভা নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ফল না করতে পারলে আদৌ সব সাংসদকে চিরাগ পাসোয়ান এলজেপিতে ধরে রাখতে পারবেন কিনা তাও বড়ো প্রশ্ন।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in