
অযোধ্যাতে রামমন্দিরের শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগদানের সঙ্গে স্বাধীনতার পরে সোমনাথ মন্দিরের পুনর্নিমাণের তুলনা টেনে আনছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান সময়ের এই ঘটনা ভারতের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেই তাঁদের অভিমত।
হিন্দুত্ববাদীরা সোমনাথ মন্দির নির্মাণের পিছনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর 'অভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি'র সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। তাঁরা ভুলেই গিয়েছিলেন, গান্ধিজী প্রথম সর্দার প্যাটেল ও কেএম মুন্সিকে সোমনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণের উপদেশ দিয়েছিলেন। সরকারি টাকায় নয়, বেসরকারি উদ্যোগে এই মন্দির নির্মাণ করার কথা বলেছিলেন।
১৯৫১ সালের ২ মার্চ রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রধানমন্ত্রী নেহরুকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি জানান, সোমনাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই অনুষ্ঠানের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে চান। কারণ তিনি কখনও বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেননি।
এই চিঠির উত্তরে নেহরু জানান, 'প্রিয় রাজেন্দ্রবাবু, আমি স্বীকার করছি সোমনাথ মন্দিরের উদ্বোধনের সঙ্গে আপনার যুক্ত হওয়া আমার পছন্দ নয়। আপনি বা অন্য কেউ উদ্বোধনের কাজ করতেই পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আপনার এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অনেক প্রভাব ফেলতে পারে।' যদিও পরে মন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি। সেই সময় নেহরু সেই উত্তর প্রমাণ দেয়, কীভাবে সেই সময় উচ্চ স্তরের পার্থক্যগুলো মহান সৌজন্যতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার সাথে পরিচালিত হয়েছিল।
এর এক মাস পর সোমনাথ মন্দির ইস্যুটি রাজনৈতিক বিতর্কের পর্যায়ে চলে যায়। তখন তিনি আরও একটি চিঠিতে রাজেন্দ্র প্রসাদকে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, একটি ধর্মনিরপেক্ষ সরকার কীভাবে এমন একটি অনুষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের জুড়তে পারে। এটি সরকারের নীতি বিরুদ্ধ কাজ। মন্দিরের সঙ্গে সরকারের যোগে তাঁর আপত্তি এই কারণেই ছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন