আইনত নিষিদ্ধ - তবু ২০১৯-এ ভূগর্ভস্থ নর্দমা সাফ করতে নেমে দেশে মৃত ১১০ জন

কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দ ১১০ কোটি
ছবি প্রতীকী সংগৃহীত
ছবি প্রতীকী সংগৃহীত

ভারতে ম্যানুয়াল স্ক্যাভাঞ্জিং বা মানুষকে দিয়ে সেপটিক ট্যাঙ্ক বা ভূগর্ভস্থ নর্দমা পরিষ্কার করানো আইন করে নিষিদ্ধ হয়েছে ১৯৯৩ সালে। ২০১৫ সালে সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে মৃত্যু হয়েছিলো ৫৭ জনের। ২০১৬ সালে মারা যান ৪৮ জন। ২০১৭তে ৯৩ জন। ২০১৮তে ৬৮ জন এবং ২০১৯ এ ১১০ জন।

১৯৯৩ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই পেশায় নিযুক্ত মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা ৮১৪। পরিসংখ্যানের বিচারে ২০১৯-এই মৃত্যুর সংখ্যা সবথেকে বেশি। রাজ্যওয়ারি হিসেবে তামিলনাড়ুতে ১৯৯৩ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ২০৬। এরপরেই আছে গুজরাট। যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ১৫৬। উত্তরপ্রদেশে ৭৮ এবং কর্ণাটকে ৭৩।

২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু Health, Safety and Dignity of Sanitation Workers শীর্ষক এক রিপোর্টে জানিয়েছিলো ভারতে আইন থাকা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত ম্যানুয়াল স্ক্যাভাঞ্জিং কমানো যায়নি। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিলো – মূলত নিচু জাতির মানুষদের দিয়েই এই কাজ করানো হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অতি ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ করানো হয় ঠিকা বা চুক্তি ভিত্তিতে। বহু সময়েই অর্থের বদলে শুধুমাত্র খাদ্যের বিনিময়ে এই কাজ করানো হয়।

এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে এই ধরণের শ্রমিকদের পুনর্বাসন প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। এর আগের বছরেও একই অঙ্কের টাকা বাজেট বরাদ্দ ছিলো। গতবছর, অর্থাৎ ২০১৯-২০র বাজেট পেশের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ম্যানুয়াল স্ক্যাভাঞ্জিং বন্ধ করতে যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হবে। যদিও কোনো ব্যবস্থাই যে হয়নি তার প্রমাণ ২০১৯ সালে ১১০ জনের মৃত্যু।

২০১৫ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ এই পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাসের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে এই পেশায় নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ হাজার ১৩০জন। দেশের ১৮টি রাজ্যের মোট ১৭০টি জেলার এই হিসেব জানিয়েছিলো কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও এর আগে ইউপিএ-২ সরকারের আমলে ২০১৩ সালে সংসদে পাশ হয়েছিলো Prohibition of Employment as Manual Scavengers and Their Rehabilitation Act। যেখানে বলা হয়েছিলো কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে ভূগর্ভস্থ নর্দমা পরিষ্কার করানো অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং যার জন্য জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দুটোই হতে পারে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই আইনে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in