
২০২২ সালে ভারতের বাজারে প্রবেশের জন্য আবেদন জানিয়েছিল। অবশেষে ৩ বছর পর এলন মাস্কের ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা স্টারলিঙ্ক-কে ছাড়পত্র দিল মোদী সরকার। এরফলে ভারতে স্যাটালাইট নির্ভর ইন্টারনেট পরিষেবায় নবজোয়ার আসতে চলেছে বলে আশা করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, এয়ারটেল ও জিও'র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ভারতে অত্যাধুনিক ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করবে স্টারলিঙ্ক।
২০২২ সালে ভারতের বাজারে প্রবেশের জন্য আবেদন জানিয়েছিল এলন মাস্কের স্পেসএক্সের অধীনস্থ স্টারলিঙ্ক। যদিও সেই সময় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মাস্কের কোম্পানিকে অনুমতি দেয়নি ভারত সরকার। সূত্রের খবর, অবশেষে ভারত সরকারের তরফ থেকে সেই অনুমোদন মিলেছে। ইউটেলস্যাট ওয়ানওয়েব এবং জিও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের পরে স্টারলিঙ্ক তৃতীয় সংস্থা, যা দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানের অনুমোদন পেল। তবে অ্যামাজন কুইপার এখনও ভারত সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
সূত্রের খবর, আগামী ১২ মাসের মধ্যে দেশীয় বাজারে কাজ শুরু করবে স্টারলিঙ্ক। শুরুতে ৬০০ থেকে ৭০০ Gbps বা প্রতি সেকেন্ডে গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ অফার করে কার্যক্রম শুরু করবে। তবে ভারতে ইন্টারনেট পরিষেবার মূল্য এখনও ঘোষণা করে নি স্টারলিঙ্ক। ২০২২ সালে ইন্ডিয়ার প্রাক্তন কান্ট্রি ডিরেক্টর সঞ্জয় ভার্গব জানিয়েছিল, প্রথম বছরের জন্য প্রতি সংযোগের জন্য ১.৫৮ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে। তবে তারপর থেকে সে খরচ কমে হবে ১.১৫ লক্ষ টাকা।
বর্তমানে স্টারলিঙ্ক ১০০ টিরও বেশি দেশে ব্যবসা করছে। যেখানে আবাসিক এবং রোমিং প্ল্যান রয়েছে। বেশিরভাগ দেশে আবাসিক প্ল্যান দুটি ভাগে বিভক্ত - আবাসিক লাইট (কম ব্যবহারের জন্য, ছোট পরিবারের জন্য) এবং আবাসিক (বড় পরিবারের জন্য)। বিজনেস নিউজ ওয়েবসাইট টেকসেন্ট্রাল অনুসারে, জাম্বিয়ায় সবচেয়ে সস্তায় স্ট্যাটেলাইট পরিষেবা দেয় স্টারলিঙ্ক এবং আমেরিকায় পরিষেবা সবথেকে ব্যয়বহুল।
বিভিন্ন দেশে স্টারলিঙ্কের মাসিক মূল্য এক নজরে -
এশিয়ায় স্টারলিঙ্ক পরিষেবা পাওয়া যায় মঙ্গোলিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, ইয়েমেন এবং আজারবাইজানে।
ভারতের দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভুটান এবং বাংলাদেশেও রয়েছে এই পরিষেবা। ভুটানে আবাসিক লাইট প্ল্যানের মূল্য প্রায় ৩,০০০ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড আবাসিক প্ল্যানের মূল্য প্রায় ৪,২০০ টাকা।
বাংলাদেশে আবাসিক লাইটের মূল্য প্রায় ৩,০০০ টাকা এবং আবাসিক প্ল্যানের মূল্য ৪,০০০ টাকা।
মালয়েশিয়ায় আবাসিক লাইট প্ল্যান প্রায় ২,৬০০ টাকা এবং আবাসিক প্ল্যান প্রায় ৪,৬০০ টাকায় পাওয়া যায়।
জাপানে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রায় ৪,০০০ টাকায় এবং ফিলিপাইনে প্রায় ৬,০০০ টাকায় পাওয়া যায়।
আমেরিকায়, বলিভিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো কয়েকটি জায়গা ছাড়া প্রায় প্রতিটি দেশেই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করেছে স্টারলিঙ্ক। নিউ ইয়র্কে আবাসিক লাইটের দাম প্রায় ২,৫০০ টাকা এবং আবাসিক ৪,০০০ টাকা। কানাডায়, প্রথম প্ল্যানটি ৬,৮০০ টাকায় এবং দ্বিতীয়টি প্রায় ৯,০০০ টাকায় পাওয়া যায়।
একইভাবে, বসনিয়া, ইউক্রেন, হার্জেগোভিনা এবং সার্বিয়া বাদে বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশে স্টারলিংক পরিষেবা চালু রয়েছে। ফ্রান্সে, রেসিডেন্সিয়াল লাইটের দাম ২,৮০০ টাকা এবং রেসিডেন্সিয়াল প্ল্যান প্রায় ৪,০০০ টাকা। আমেরিকায় বর্তমানে প্রায় ৮,৭০০ টাকায় শুধুমাত্র রেসিডেন্সিয়াল প্ল্যান পাওয়া যায়। ইতালিতে রেসিডেন্সিয়াল লাইট এবং রেসিডেন্সিয়াল প্ল্যান যথাক্রমে ৩,৪০০ টাকা এবং প্রায় ৫,০০০ টাকা।
নাইজার, সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়া, জিম্বাবুয়ে এবং মোজাম্বিক হল আফ্রিকার কয়েকটি দেশ যেখানে বর্তমানে স্টারলিংক পরিষেবা প্রদান করছে। যেখানে রেসিডেন্সিয়াল লাইট প্রায় ৪,০০০ টাকায় এবং ঘানায় রেসিডেন্সিয়াল প্রায় ৬,০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের প্রায় পুরোটাই স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীর আওতাভুক্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন