প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিসৌজন্যে - IQair

বায়ুদূষণই সবচেয়ে বড় বিপদ, উত্তর ভারতের বাসিন্দাদের গড় আয়ু ৯ বছর করে কমতে পারে - রিপোর্ট

আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স-(একিউএলআই) এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা রিপোর্ট তেমনই দাবি করছে।
Published on

গড় আয়ু কমে যাচ্ছে মানুষের। কারণ ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ। এক-দুই বছর নয়, গড়ে ৮-৯ বছরও কমছে মানুষের আয়ু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংবস্থার বেঁধে দেওয়া মাত্রায় বায়ুদূষণ থাকলে গড় আয়ু না কমে সাড়ে পাঁচ বছর বেড়ে যেত। আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স-(একিউএলআই) এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা রিপোর্ট তেমনই দাবি করছে। সেই রিপোর্ট বলছে, উত্তর ভারতের বাসিন্দাদের গড় আয়ু নয় বছর করে কমে যেতে পারে। মহারাষ্ট্র বা মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দাদের গড় আয়ু কমছে গড়ে আড়াই থেকে প্রায় তিন বছর। বায়ুদূষণই এখন বিশ্ব স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিপদ, বলেছে রিপোর্ট।

একিউএলআইয়ের মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত দেশ ভারত। কারণ এখানকার ৪০ শতাংশ মানুষ গাঙ্গেয় সমভূমির বাসিন্দা। এই অঞ্চলে বায়ুদূষণের মাত্রা বিশ্বের যে কোনও অঞ্চলের বছরভর বায়ুদূষণ-মাত্রাকে প্রায়ই বেশি হয়ে যায়। কারণ হিসেবে রিপোর্ট বলছে, গত ২০ বছরে ভারত ও পাকিস্তানেই ২০০০ সালের তুলনায় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে চারগুণ। ১৯৯৮ থেকে ২০১৭-র মধ্যে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ-নেপাল মিলিয়ে জীবাশ্ম-জ্বালানি নির্ভর তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে তিনগুণ। সেই সঙ্গে ফসলের গোড়া পোড়ানো, ইটভাটা এবং অন্যান্য শিল্প-কর্মকাণ্ড তো রয়েছেই।

রিপোর্টে ভারত ও গোটা দক্ষিণ এশিয়ার বায়ুদূষণের ভয়াবহতা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ-নেপালে বাস করে। এই চার দেশই দূষণ বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বেশি। তার জেরে পৃথিবীতে ব্যক্তি-আয়ুষ্কালের মোট যত বছর নষ্ট হতে পারে, তার ৬০ শতাংশই হবে দক্ষিণ এশিয়ায়। হু'র নির্দেশিকা অনুযায়ী দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়াবাসীর গড় আয়ু ৫.৬ বছর করে বাড়তে পারে।

বিশুদ্ধ বাতাসে মানুষের আয়ু কতটা বাড়ে, সমীক্ষা করেছে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট। তাদের মতে, ২০১৯-এ গাঙ্গেয় সমভূমিতে বায়ুদূষণের যে মাত্রা ছিল, তা বজায় থাকলে ওই অঞ্চলের ৪৮ কোটি বাসিন্দার গড় আয়ু অন্তত ৯ বছর করে কমে যেতে পারে। হু'র নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি ঘন মিটারে বাতাসে সূক্ষ্ম কণার স্বাভাবিক পরিমাণ হওয়া উচিত ১০ মাইক্রোগ্রাম। ভারতে তা রয়েছে ৭০ মাইক্রোগ্রাম। যা বিশ্বের অন্য কোনও দেশে নেই।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in