Lakshadweep: বাড়ছে জলস্তর, আগামী ৩০ বছরে জলের তলায় যেতে পারে ১০টি দ্বীপ - IIT-র সমীক্ষা

লাক্ষাদ্বীপের ১০টি দ্বীপ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ডুবে যাবার সম্ভাবনা। এই তথ্য সম্প্রতি উঠে এসেছে এক সমীক্ষায়। খড়গপুর IIT-র Ocean Engineering Scientist-রা এক সমীক্ষা চালিয়েছিলেন ৩৬টি দ্বীপকে কেন্দ্র করে।
আগাত্তি বিমানবন্দর
আগাত্তি বিমানবন্দরফাইল ছবি সংগৃহীত

লাক্ষাদ্বীপের কমপক্ষে ১০টি দ্বীপ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ডুবে যাবার সম্ভাবনা। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য সম্প্রতি উঠে এসেছে এক সমীক্ষায়। খড়গপুর আইআইটি-র ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্টিস্টরা এক সমীক্ষা চালিয়েছিলেন লাক্ষাদ্বীপের মোট ৩৬টি দ্বীপকে কেন্দ্র করে। এই সমীক্ষায় জানা গেছে গত ১৫ বছর ধরে সমুদ্রের জলস্তর ক্রমাগত বেড়ে চলায় লাক্ষাদ্বীপের ৩৬ টি দ্বীপের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি দ্বীপের ৬০ শতাংশের বেশি জলের তলায় চলে যাবে।

মালায়লাম এবং সংস্কৃততে লাক্ষাদ্বীপের অর্থ বহু দ্বীপের সমষ্টি। ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপে মোট দ্বীপের সংখ্যা ৩৬। ৩২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই দ্বীপগুলো ছড়িয়ে আছে। এই অঞ্চলের রাজধানী এবং প্রধান শহর কারাভাট্টি। এছাড়াও এই অঞ্চল জুড়ে আছে ১২টি উপহ্রদ বেষ্টনকারী বৃত্তাকার প্রবালপ্রাচীর, ৩ টি প্রবালপ্রাচীর, ৫টি অর্ধ নিমজ্জিত অঞ্চল এবং ১০ টি জনবসতি অধ্যুষিত অঞ্চল।

সম্প্রতি এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ম্যাগাজিন এলসেভিয়ার-এ। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে এই দ্বীপপুঞ্জের কমপক্ষে ১০টি দ্বীপ আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে জলের তলায় চলে যাবার সম্ভাবনা। এই দ্বীপগুলির মধ্যে অন্তত ৮টি দ্বীপের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জমিই জলের তলায় চলে যাবে। বাকী দুটি দ্বীপের ৪০ শতাংশ জমি জলের তলায় চলে যাবার সম্ভাবনা।

এই বিষয়ে খড়গপুরের আইআইটি-র ডিপার্টমেন্ট অফ ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পক্ষ থেকে প্রসাদ কে ভাস্করণ আইএএনএস-কে জানিয়েছেন, লাক্ষাদ্বীপের প্রধান সমস্যা এখানে জলস্তর মাপবার বা ঢেউ-এর গতি প্রকৃতি মাপবার মত কোনো পরিকাঠামো নেই। ফলে স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুরো সমীক্ষা চালাতে হয়েছে। যেখানে ১৯৯৩ সালের আগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই সমীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে আমেরিকার জিএফডিএল মডেল এবং জাপানের মিরক মডেল। এই দুই মডেল ব্যবহার করে সমুদ্রে জলস্তর বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন এক সমীক্ষা চালিয়েছি, আমরা দেখেছি এই শতাব্দীর শেষে এই অঞ্চলের ৩৬টি দ্বীপে জলস্তর বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়াবে .৮ মিলিমিটার থেকে ২ মিটার পর্যন্ত। যার মধ্যে কিছু দ্বীপে ইতিমধ্যেই .৭৮ মিলিমিটার জলস্তর বেড়ে গেছে। আমরা সমীক্ষা থেকে জানতে পেরেছি ২০৩৫ সালের মধ্যে এইসব দ্বীপে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জমি জলের তলায় চলে যাবে। এই অঞ্চলের বেশ কিছু দ্বীপের অনেকটাই এখনই জলের তলায় চলে গেছে। সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাতলাত দ্বীপের। যেখানে ৮২ শতাংশ জমি জলের তলায় চলে গেছে।

ওই সমীক্ষা থেকে আরও জানা গেছে বঙ্গোপসাগরের থেকে আরব সাগরে জলস্তর বৃদ্ধির পরিমাণ অনেকটাই বেশি। বঙ্গোপসাগরের লবণাক্ততা অনেকটাই কম হবার কারণে এটা হচ্ছে। তাই ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের থেকে লাক্ষাদ্বীপের বিপদ অনেক বেশি।

এই সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, জলস্তর বৃদ্ধিতে রাজধানী কারাভাত্তির ৭০ শতাংশ ক্ষতি হবার সম্ভাবনা। ইতিমধ্যেই আগাত্তির বিমানবন্দরে এই ক্ষতির চিহ্ন পাওয়া গেছে। যা ক্রমশ বাড়ছে।

ভাস্করণ আরও জানিয়েছেন, আমরা সরকারের কাছে জানিয়েছি জরুরি ভিত্তিতে সমুদ্র তীর বরাবর কৃত্রিম বাঁধের বন্দোবস্ত করা উচিত। বিশেষত বিপরা, মিনিকয়, কাল্পেনি, কাভারাত্তি, আগাত্তি, কিলতান, চাতলাত, কাডমাট এবং আমিনি দ্বীপ বাঁচানোর জন্য অবিলম্বে এই ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এই অঞ্চলে সবথেকে নিরাপদ অ্যান্দ্রথে জনবসতি সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

আইআইটি খড়গপুরের এই সমীক্ষায় যুক্ত ছিলেন – আয়েশা জেনাথ, আথিরা কৃষ্ণান, সৈকত কুমার পাল, প্রসাদ কে ভাস্করণ। এছাড়াও এই সমীক্ষায় যুক্ত ছিলো ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধীন ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রাম বিভাগ।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in