তালিবানি দখলের পর আফগানিস্তানের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তালিবানিদের প্রতি তাদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা চালাচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে শীঘ্রই তাদের কাছে তালিবানিদের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট-এর মান্যতা চেয়ে আবেদন আসবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে হোয়াটসঅ্যাপ সহ সমস্ত ফেসবুক অ্যাপ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তালিবানিদের। তালিবানিদের পক্ষে কোনো পোস্ট করা হলে সেই পোষ্ট ব্যান করা হবে জানিয়ে দিয়েছে ফেসবুক। ইতিমধ্যেই তালিবানকে বিপজ্জনক সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে ফেসবুক।
এখনও পর্যন্ত তালিবানি তৎপরতা সম্পর্কে কোনো নীতি গ্রহণ করেনি ট্যুইটার। মাইক্রো-ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম ট্যুইটার দ্য ভার্জকে জানিয়েছে যে, এই প্ল্যাটফর্ম হিংসাত্মক বিষয়বস্তু, ভুয়ো তথ্য বা তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনকারী অ্যাকাউন্টগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
মঙ্গলবার ট্যুইটারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, "আফগানিস্তানের পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সে দেশের বহু মানুষকে টুইটার ব্যবহার করে সাহায্য ও সহায়তা চাইতেও দেখা গেছে।"
যদিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর কেউই এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে তালিবান সম্পর্কে তাদের নীতির কোনো পরিবর্তন করেনি, তবুও আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরে বিষয়বস্তুর দিকে কড়া নজরদারি চলছে। যাতে কোনোভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের নিয়ম লঙ্ঘিত না হয়।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, তালিবানিদের আফগানিস্তান সরকারের অফিসিয়াল ফেসবুক এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা।
ইউটিউব জানিয়েছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আইনের ব্যাখ্যার ভিত্তিতে সমস্ত তালিবান-যুক্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেন, "ইউটিউব প্রাসঙ্গিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞাসহ সমস্ত প্রযোজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং বাণিজ্য সম্মতি আইন মেনে চলে। যেমন, যদি আমরা আফগান তালিবানদের মালিকানাধীন এবং পরিচালিত একটিও অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাই, তাহলে আমরা তা সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিই।"
ফেসবুক জানিয়েছে, কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের আগে সারা বিশ্বে তালিবানিদের প্রসঙ্গে কী ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে তার দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই বিশ্বের কাছে আফগানিস্তানের তালিবানিদের স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে। যদিও চীন তালিবানিদের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের পক্ষপাতী।
চীন বলেছে, তালেবান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে একটি "উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক" ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার উত্তরণ নিশ্চিত করবে।
ফেসবুকের মুখপাত্র দ্য ভার্জকে বলেন, "ফেসবুক কোনো নির্দিষ্ট দেশে স্বীকৃত সরকার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয় না বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়।"
সোমবার এক টেলিভিশন ভাষণে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়েও স্বীকার করেছেন যে তালিবানিদের কাছে কাবুলের পতন ওয়াশিংটনের যা প্রত্যাশা করেছিলো তার থেকে অনেক তাড়াতাড়ি এসেছে।
মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর হাতে ২০০১ সালে উৎখাত হওয়া তালিবানিরা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এশীয় দেশের রাজধানী কাবুল দখল করে।
- with inputs from IANS
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।