নেতাজিকে 'হিন্দু জিহাদি' বলতেন সাভারকর: সুভাষিণী আলি

আলির কথায়, সুভাষচন্দ্র বোসকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি বাংলায় আসন্ন নির্বাচনে নিজেদের জায়গা কিছুটা ভালো করার চেষ্টা করছে। নেহরুকে ছোট করার চেষ্টাও চালাচ্ছে পাশাপাশি।
সুভাষিণী আলি
সুভাষিণী আলিফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসকে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে। বিশেষত নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীকে নিয়ে গত সপ্তাহে যে পরিস্থিতি দেখা গেল, তা থেকে স্পষ্ট, নেতাজির গুণগান কে বেশি গাইতে পারে, তা নিয়ে এক গোপন যুদ্ধ চলছে দুই দলের মধ্যে। ইতিমধ্যেই ২৩ জানুয়ারিকে 'পরাক্রম দিবস' হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। বছরভর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার জন্য নেতাজির নামে একটি কমিটিও গঠন করেছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের আবহে শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বাম দলগুলোর তরফে মনে করা হচ্ছে, নেতাজি আবেগকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি ফায়দা লুটতে চাইছে।

তবে বিজেপির হিন্দুত্ব ভাবাবেগ দেশাত্ববোধের কাছে তেমন কাজ করেনি বলে দাবি করেছেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি-র কর্নেল প্রেম সেহগল ও ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগলের মেয়ে সুভাষিণী আলি। CPIM-এর পলিটব্যুরো সদস্য আলি সম্প্রতি 'আউটলুক'কে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বিজেপি সুভাষচন্দ্র বোসকে কাজে লাগিয়ে বাংলায় আসন্ন নির্বাচনে নিজেদের জায়গা কিছুটা ভালো করার চেষ্টা করছে। নেহরুকে ছোট করার চেষ্টাও চালাচ্ছে পাশাপাশি।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'বিজেপি কোনও স্বাধীনতার ইতিহাসই জানেনা, বরং জাতীয় হিরোদের নিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে চাইছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন, বোস, ভগৎ সিং এবং অন্যান্যরা। যাঁদের নাম করে দেশাত্ববোধের পরিচয় দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।' নেতাজি ছিলেন, বিনায়ক দামোদর সাভারকরের কট্টর সমালোচক। যিনি হিন্দু মহাসভার সভাপতি ছিলেন ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত। সাভারকর নেতাজিকে 'হিন্দু জিহাদি' বলে ঘোষণা করেছিলেন। এবং নেতাজির ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধিতা করেছিলেন।

আলি আরও দাবি করেন, 'বোস ও সাভারকর একে অপরের একেবারে বিরোধী ছিলেন। সাভারকর ব্রিটিশ সেনা থেকে যোদ্ধা নিয়োগ করেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। তাঁর হিন্দু মহাসভা বাংলায় মুসলিম লিগের সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করেছিল। বোস কখনই সাভারকর এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জাতপাতের ভিত্তিতে হিন্দু মহাসভা গঠন নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। নেতাজি শুধু বলতেন, তাঁদের জনসভাগুলি ভেঙে দেওয়া উচিত, যাতে তাঁদের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে যে বিষ ঝরতো, তা বন্ধ করা যায়।'

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in