Howrah: জল সংকট মিটলেও আশঙ্কা বাড়াচ্ছে ফাটল! বিপদ জেনেও বাড়ি ছাড়তে নারাজ বাসিন্দারা

People's Reporter: ভাগাড় থেকে জঞ্জাল কমানোর চেষ্টা করা হবে। যার জন্য 'বায়োমাইনিং' পদ্ধতিতে এগোবে প্রশাসন। এর কারণে যতটা এলাকা জুড়ে প্রভাব পড়তে পারে, সেই এলাকার সমস্ত বাড়ি খালি করা হবে।
বেলগাছিয়া ভাগাড় সংলগ্ন এলাকায় ফাটল
বেলগাছিয়া ভাগাড় সংলগ্ন এলাকায় ফাটলছবি - সংগৃহীত
Published on

জল সংকট মিটলেও ধস নামার ফলে একাধিক বাড়িতে ক্রমশ বাড়ছে ফাটল। ফলে এড়ানো যাচ্ছে না বড়সড় বিপদের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও নিজেদের বাড়ি ছাড়তে নারাজ হাওড়ার বেলগাছিয়ার বাসিন্দারা। পুনর্বাসনের দাবি তুলে সোমবার সকাল থেকে এলাকায় বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অন্যদিকে, সোমবারই ভাগাড়ের অবস্থা পরিদর্শন করতে বেলগাছিয়া যেতে পারেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলে সূত্রের খবর।

গত ১৯ মার্চ হাওড়ার বেলগাছিয়ার ভাগাড়ে ধস নামে। যার জেরে ফেটে যায় শিবপুর উত্তর হাওড়া কেন্দ্রের জল সরবরাহের মূল পাইপলাইন। ফলে উত্তর হাওড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ হয়ে যায় জল সরবরাহ। সংকটের মুখে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও সেই সময় পাশে দাঁড়ায় কলকাতা ও উত্তরপাড়া পুরসভা। পাঠানো হয় 'নির্জলা' জলের ট্যাঙ্কার। অন্যদিকে, ভাগাড়ের ধসের ফলে ফাটল ধরে ওই এলাকার প্রায় দেড় বর্গ কিলোমিটার রাস্তায়।

এরমধ্যেই শনিবার দেখা যায় এক নতুন সমস্যা। জানা যায়, মাটি থেকে মিথেন গ্যাস বেরোচ্ছে। পাশেই গঙ্গা ফলে নদীর জলে মিথেন গ্যাস মেশার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যার ফলে দুশ্চিন্তা বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় মেরামতির কাজ। শনিবারই শিবপুর-সহ হাওড়ার একাংশে জল সরবরাহের কাজ শুরু হয়। এরপর কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার যৌথ উদ্যোগে রবিবার সন্ধ্যের মধ্যে গোটা হাওড়া এলাকায় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।

জল সংকট মিটলেও ভাগাড়ের পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক, তা খতিয়ে দেখতে রবিবার ভাগাড় পরিদর্শনের পর বৈঠক ডাকেন জেলাশাসক। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার, পুরসভার আধিকারিকরা ছাড়াও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধনকুমার ঘোষের নেতৃত্বে চারজন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক। বৈঠকের পর ভাগাড়ের মাটি পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া, ভাগাড় থেকে জঞ্জাল কমানোর চেষ্টা করা হবে। যার জন্য 'বায়োমাইনিং' পদ্ধতিতে এগোবে প্রশাসন। এর কারণে যতটা এলাকা জুড়ে প্রভাব পড়তে পারে, সেই এলাকার সমস্ত বাড়ি খালি করা হবে বলে রবিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সোমবার সকালে বেলগাছিয়ায় পৌঁছান বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। ভাগাড়ের মাটি পরীক্ষা করা হবে। পরিস্থিতি সন্তোষজনক হলে বায়োমাইনিং পদ্ধতির মাধ্যমে জঞ্জাল সরানো হবে। সে কারণেই সকাল থেকেই এলাকায় চলে মাইকিং। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এলাকা খালি করার নির্দেশিকা দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য আপাতত এলাকারই একটি ক্লাবে বসবাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের এই প্রস্তাবে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

সোমবার সকালে এলাকার মহিলারা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের আশঙ্কা, ভাগাড় পরিষ্কারের নামে বাড়ি ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। আর কোনদিনও স্থায়ী মাথা গোজার ঠাঁই পাবেন না তাঁরা। তাঁদের দাবি, বহু কষ্টে লোন নিয়ে বাড়ি তৈরি করেছেন। পুনর্বাসনের দাবী জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in