Tuhina Khatun Case: তিন মাস ধরে পলাতক থাকার পরও জামিন বাদশার! CBI তদন্ত চায় তুহিনার পরিবার

পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা স্বত্ত্বেও বর্ধমানের স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের সাথে বাদশাকে একাধিকবার প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গেছে। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরালও হয়েছে।
মূল অভিযুক্তের সঙ্গে বিধায়ক খোকন দাস (ইনসেটে)
মূল অভিযুক্তের সঙ্গে বিধায়ক খোকন দাস (ইনসেটে)ছবি - সংগৃহীত
Published on

আগাম জামিন পেয়ে গেল তুহিনা খাতুন আত্মহত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত বাদশা। বর্ধমানের কলেজ ছাত্রী তুহিনা খাতুনের আত্মঘাতী হওয়ার পিছনে মূল অভিযুক্ত হিসেবে বাদশার নামে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছিল তাঁর পরিবার। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল গত ২ মার্চ। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও তিন মাস পেরিয়ে গেছে অথচ বাদশাকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

প্রসঙ্গত, বর্ধমান রাজ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তুহিনা খাতুন। পুরভোটের ফল প্রকাশের দিনই বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তুহিনা খাতুনের (১৯) দেহ। তুহিনার বাড়ি যেখানে, সেই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে ভোটে জেতেন শেখ বসিরুদ্দিন ওরফে বাদশা, যিনি এলাকায় দাগী তোলাবাজ হিসেবে পরিচিত।

তুহিনার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটে জেতার পরই এলাকায় বোমাবাজি শুরু করেন বাদশা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসাতে থাকেন। তুহিনার বাড়িতেও যান বাদশা। সেই সময় বাড়িতে তুহিনা ও তাঁর দুই বোন ছাড়া কেউ ছিল না। এর কিছুক্ষণ পরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তুহিনার।

ইতিমধ্যে পলাতক বাদশা মহকুমা শাসকের উপস্থিতিতে গোপনে কাউন্সিলর হিসাবে শপথও নিয়েছে। বর্ধমান আদালতে তুহিনা খাতুনের কেস চলাকালীন বিচারক যথেষ্ট বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, একজন জনপ্রতিনিধিকে পুলিশ কেন গ্রেপ্তার করতে পারছে না।

শুধু তাই নয়, পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা স্বত্ত্বেও বর্ধমানের স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের সাথে বাদশাকে একাধিকবার প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গেছে। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরালও হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকার পর আশ্চর্যজনকভাবেই তুহিনা খাতুনের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে বাদশার জামিনও মঞ্জুর হয়েছে।

তুহিনার দিদি কুহেলি বিবি জানিয়েছেন, "আমাদের এই পুলিশের উপর কোনও ভরসা নেই। আমরা চাই সিবিআই তদন্ত। প্রয়োজন হলে ফের আমার বোনের দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করুক সিবিআই-এর উপস্থিতিতে। প্রকৃত সত্য সামনে আসুক।"

তিনি আরও বলেন, "পুলিশ যা কেস সাজিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাদশার একমাস ধরে লাগাতার অত্যাচারেই আমার বোন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে! পুলিশ শাসক দলের কাউন্সিলরকে বাঁচাতে তুহিনার প্রেমিক ও বাদশা দুজনকেই দোষী সাজিয়েছে। আমরা তুহিনার প্রেমিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করিনি।"

তুহিনার দিদির অভিযোগ, "কীভাবে এই পুলিশের উপর ভরসা করব বলুন, আমাদের বাড়ির সামনে যে কুরুচিপূর্ণ ছবি এঁকেছিল বাদশার দল তা দেখে গেল পুলিশ, বাদশাকে ফোনে বলেছিল মুছে দাও ছবি। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনের কথা মানল না বাদশা। যেদিন ভোটে জিতল বাদশা, সেই দিনটা আমাদের কাছে বিভীষিকাময়। বিজয় মিছিল হল, বাজনা বাজিয়ে নাচ-গান করে আমাদের ঘরে রং আর বোম মারল। বুনিকে (তুহিনা) চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে মারধর, তারপর যেখানে সেখানে হাত দিয়ে ওর শ্লীলতাহানি করল। এই লজ্জা রাখব কোথায়?"

মূল অভিযুক্তের সঙ্গে বিধায়ক খোকন দাস (ইনসেটে)
'বোন ঝুলছে, আর বাদশার গুন্ডারা আমাদের চুলের মুঠি ধরে মারছে' - কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তুহিনার বোনেরা

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in