TMC: লটারির টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে বিপুল আর্থিক প্রতারণা! অভিযুক্ত তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা

People's Reporter: অভিযোগ, লটারি বিজেতাদের প্যান কার্ড সহ নথি সংগ্রহ করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এরপরেই তাঁদের ৪ জনের ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করে পৃথকভাবে ৩০ লক্ষ টাকা করে ঋণের ব্যবস্থা করেন।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি ছবি - সংগৃহীত
Published on

সোমবার কোচবিহারের তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতার বাড়িতে হানা দিয়েছিল আয়কর বিভাগ। টানা ১৯ ঘন্টা চলে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। সেই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে এবার উঠল প্রতারণার অভিযোগ। চারজনের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক নেতা জয়দেব আর্যর বিরুদ্ধে। বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোচবিহার জেলা আয়কর দপ্তরে ডাকা হয় সেই চার জনকে।

জয়দেব আর্যর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের গুড়িয়াহাটি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বকুলতলা এলাকার বাসিন্দা রাম নট্টের স্ত্রী সাবিত্রী নট্ট এবং এই ব্লকেরই গুড়িয়াহাটি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পিলখানা এলাকার বাসিন্দা বুল্টন সাহার স্ত্রী মধুমিতা সাহা। বুধবার তাঁদের এবং আরও দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় আয়কর দপ্তরে।

এদিন আয়কর দপ্তরের বাইরে দাঁড়িয়ে সাবিত্রী নট্ট এবং মধুমিতা সাহা জানান, লটারিতে এক কোটি টাকা জিতেছিলেন তাঁরা। নিয়ম অনুযায়ী, বিজেতারা হাতে পান প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। কিন্তু ওই শিক্ষক নেতা তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেন বাকি ৩০ লক্ষ টাকাও পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে ১০ লক্ষ টাকা বিজেতাদের হাতে দেওয়া হবে এবং বাকি ২০ লক্ষ টাকা নিজে রাখবেন। শিক্ষক নেতার এই প্রস্তাবে রাজি হন তাঁরা।

অভিযোগ, এরপরেই লটারি বিজেতাদের প্যান কার্ড সহ নথি সংগ্রহ করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। তারপর একটি ব্যাঙ্কের হলদিবাড়ি শাখায় তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখিয়ে ওই ৪ জনের নামে পৃথকভাবে ৩০ লক্ষ টাকা করে ঋণের ব্যবস্থা করেন। ৪ জনের হাতে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ৮ লক্ষ টাকা করে তুলে দেন তিনি। বাকি টাকাটা নিজে রাখেন।

এর কিছুদিন বাদেই লটারি বিজেতারা জানতে পারেন এই ঋণ নেওয়ার কথা। তখনই তাঁরা বিষয়টি আয়কর দপ্তরের নজরে আনেন বলে জানা যায়। এরপর তদন্তে নেমে সোমবার শিক্ষক নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালান আয়কর আধিকারিকরা। প্রথমে জয়দেবের দাদা জগদীশ আর্যর বাড়ি যান তাঁরা। সেখান থেকে জয়দেবকে নিয়ে তাঁর আরও একটা বাড়িতে যান আধিকারিকেরা। তুফানগঞ্জ পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়া এলাকার ওই বাড়িতেই তল্লাশি অভিযান চলে। টানা ১৯ ঘন্টা পর মঙ্গলবার সকাল ১১ টা নাগাদ জয়দেবের বাড়ি থেকে বেরোন আয়কর আধিকারিকেরা।

কোচবিহারের তুফানগঞ্জ টাউন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক জয়দেব। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সেলের তুফানগঞ্জ ২ নং সার্কেলের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর জয়দেবের দাবি, তাঁর মোবাইল এবং মেল হ্যাক করে কেউ বহু টাকা আদানপ্রদান করেছেন। সেইকারণেই আয়কর হানা দিয়েছিল তাঁর বাড়িতে। ওই শিক্ষকনেতার আরও দাবি, রাতভর তল্লাশি চালিয়ে সেই হ্যাকারদের হদিশ মিলেছে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in