
সোমবার রাতে বাঁকুড়ার সোনামুখী এলাকায় তৃণমূলের এক বুথ সভাপতিকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম সেকেন্দার খাঁ ওরফে সায়ন খাঁ। এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মূল অভিযুক্ত নাসিম শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে সোমবার রাতেই নাসিম শেখের দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
তথ্য বলছে, গত ৩৭ দিনে রাজ্যের শাসক দলের ১০ জন নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন। পরপর শাসকদলের নেতা-কর্মী খুন নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
সোমবার রাতে খুনের ঘটনা ঘটেছে সোনামুখী থানার চকাই গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন রাত ৯টা নাগাদ স্থানীয় পখন্না বাজার থেকে বাইকে চড়ে চকাই গ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন সেকেন্দার খাঁ। সেই সময় গ্রামে ঢোকার মুখে DVC ক্যানালের পাড়ে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালানো হয়। তাঁর মাথায় ও পিঠে গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় ধৃত নাসিম শেখও তৃণমূল নেতা। তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি।
এর আগে ১ মার্চ নর্দমা তৈরি নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই চকাই গ্রামেই গুলি চলেছিল। জখম হয়েছিলেন নাসিম শেখ, যিনি সেইসময় শাসকদলের বুথ সভাপতি ছিলেন।
অন্যদিকে, এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করছে তৃণমূল। অভিযোগ, ছাব্বিশের বিধানসভার আগে লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারবে না বুঝেই, সিপিআইএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূলের ভাগ-বাঁটোয়ারার লড়াইয়ের জেরেই এই খুন। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সিপিআইএমের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এই ঘটনা নিয়ে গত ৩৭ দিনে মোট ১০ জন তৃণমূলের নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। এর আগে ৯ আগস্ট গুলি করে খুন করা হয় কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূলের সহ সভাপতিকে। এই ঘটনায় দলের একাংশের দিকে আঙুল তুলেছেন নিহতের বাবা।
৩০ জুলাই, হুগলির কোন্নগরের তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তীকে কুপিয়ে খুন করা হয়। কোন্নগরের কানাইপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ছিলেন পিন্টু। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে হুগলির কুখ্যাত গ্যাংস্টার ভোলানাথ দাস ওরফে বাঘাকে।
১২ জুলাই বীরভূমে সাঁইথিয়ার শ্রীনিধিপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি পীযূষ ঘোষকে খুন করা হয়।
১০ জুলাই মালদার ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুরে তৃণমূল কর্মী আবুল কালাম আজাদকে স্ত্রীর সামনেই পিটিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য-সহ দলেরই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১০ জুলাই ভাঙড়ে খুন হন বিধায়ক সওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাজ্জাক খাঁ।
১৭ জুন গুলি করে কুপিয়ে খুন করা হয় বসিরহাটের তৃণমূল কর্মী আনোয়ার হোসেন গাজিকে। এই ঘটনায় ৭ জন গ্রেফতার হন। তবে এখনও নিখোঁজ মূল অভিযুক্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন