কোনও রকম সৌহার্দ্য-সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, সরাসরি চাকরির দাবি জানিয়ে এবারের নবান্ন অভিযান যুব বামেদের। কোন পথে, কীভাবে, সেটা বিষয় নয়। যেকোনও পথে নবান্নে পৌঁছোনোই তাঁদের লক্ষ্য। তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য এবং বিজেপিকে লালন-পালন করে বাড়িয়ে তোলার প্রতিবাদে আজ বাম ছাত্র ও যুবর দশটি সংগঠন নবান্ন অভিযানে অংশ নেবে। তাদের বক্তব্য, মমতা এবং মোদি আসলে একই মুদ্রার দুই পিঠ। কলেজস্ট্রিট থেকে তাদের মিছিল শুরু হবে।
পুলিশ প্রথমে এই অভিযানে অনুমতি দিতে না চাইলেও বামেদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে তারা এই মিছিল অভিযান করবেই। কিছু হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্য দায়ী থাকবেন বলে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর মঙ্গলবার লালবাজারে বাম যুব সংগঠনের দুই নেতাকে ডেকে পাঠানো হয়। তারপরই পুলিশের পক্ষ থেকে ডাফরিন রোড পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়। পুলিশ আটকালেও তারা মিছিল করবে, নবান্ন তো যাবেনই, এটাই তাদের হুঁশিয়ারি। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, ডোরিনা ক্রসিং বা ডাফরিন রোড, যেখানেই তাদের আটকানোর চেষ্টা করা হোক না কেন, পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে তাঁরা ভেঙে পড়বে না। এই অভিযানের স্লোগান, খেলা হবে। কিন্তু তাদের মূল বক্তব্য হল, শিক্ষা দাও, কাজ দাও, হাল ফেরাও, লাল ফেরাও। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদ ও যুব কংগ্রেসকে। তবে পুলিশ সবরকম ভাবে চেষ্টা করছে যাতে তারা কোনও ভাবেই নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে। কিন্তু যেহেতু কোন পথে তারা মিছিল করে নবান্ন অভিযান সম্পূর্ণ করবে তা এখনও জানা যায়নি। তাই পুলিশ সবরকম সতর্কতাই নিচ্ছে।
বুধবার সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, 'মহিলাদের উপর নৃশংস ভাবে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার যদি ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযান আটকাতে লাঠি চালায় পুলিশ, গোটা রাজ্য স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।'
ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র বলেন, 'যে করেই হোক আমরা নবান্নে পৌঁছবই, কলকাতা পুলিশকে আমাদের চ্যালেঞ্জ রইল। পারলে আমাদের আটকে দেখাক। ইস্পাতের ব্যারিকেড ভেঙে যৌবনের স্রোত আছড়ে পড়বে নবান্নের গেটে। আমরা নবান্নে পৌঁঁছবই। পুলিশ যদি বল প্রয়োগ করে, পরবর্তী ঘটনার জন্য দায়ী থাকবে পুলিশ।'
নবান্ন অভিযান করে সরকারকে স্মারকলিপি দেবে না ছাত্র যুবরা। নবান্নের গেটে গিয়ে তৃণমূল সরকারকে রিলিজ অর্ডার দেবে। গোটা রাজ্যজুড়ে ছাত্র যুবদের এই অভিযানে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতায় আসা শুরু হয়েছে এদিন ভোর থেকেই। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনেই স্থির হয়েছিল এদিনের অভিযান কর্মসূচির কথা। ৪০ দিন ধরে চলেছে প্রস্তুতি। রাজ্যজুড়ে হয়েছে সাতশোর বেশি বাইক মিছিল, কয়েক হাজার পথসভা, সমাবেশ।
বেলা ১২টার অনেক আগে থেকেই কলেজসট্রিট থমকে যাবে ছাত্র যুবদের ভিড়ে। কলেজ স্ট্রিট চত্বর থেকে মিছিল শুরুর আগের হবে সংক্ষিপ্ত ভাষণ, তারপরই নবান্নের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হবে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।