একদিকে বিভিন্ন লাভজনক সংস্থাগুলিকে কেন্দ্র বেসরকারিকরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের অনেকগুলি রুটের বাস বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে রাজ্য। বেসরকারি সংস্থার হাতেই নিগমের জমি লিজ হিসেবে তুলে দেওয়া হবে। শূন্য পদে নিয়োগ হবে না। চুক্তিভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ হবে। তবে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তাঁদের কাজ বা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় নেওয়া হবে না।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিএসটিসির কর্মীরা রায়গঞ্জে মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল করেন। প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন উত্তরবঙ্গে পরিবহণে উন্নতি ঘটানো হবে। শূন্য পদে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু গত ১০ বছরে বহুবার পরিবহণ মন্ত্রীর বদল ঘটেছে। এনবিএসটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায় এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের পাশে আছেন।
নিগমের এক আধিকারিক জানান, এই বেসরকারিকরণের নির্দেশিকা তাঁরা হাতে পেয়ে গিয়েছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া বাসের বাসের চালক এবং কন্ডাকটর কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করবেন। স্থায়ী কাজ বা বেতন বলে কিছু থাকবে না। বাসে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে ওই বরাত পাওয়া সংস্থার উপর। আশঙ্কা করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ পুরনিগমের বাস-বেসরকারি হাতে তুলে দেবে রাজ্য।
বিজেপি যেহেতু বেসরকারিকরণের পক্ষে, তাই তাদের পক্ষ থেকে কোনও বিরোধিতা করা হবে না। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল আগারওয়াল বলেন, চালক, কন্ডাক্টর কম থাকার কারণে এধরনের ভাবনা নেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি ডিপোয় ৭০টি রুট রয়েছে। তার অর্ধেকই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিগম সূত্রের খবর, বিভিন্ন ডিপোর কোন কোন রুট লাভজনক, কোন কোন রুটের শ্রমিক কম আছে তা নিয়ে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। এখন যেসব ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে, তাদের মেয়াদকাল আরও বাড়ানোর কথা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।
ফি মাসে নিগমের প্রয়োজন কুড়ি কোটি টাকা। রাজ্য সরকার অনুদান দেয় ৬ কোটি টাকা। কোভিড আবহাওয়ায় আয় গড়ে ১২ কোটি টাকা। মাসে লোকসান দু'কোটি টাকা। এক অর্থবছরে ২৪ কোটি টাকা ঘাটতি হচ্ছে নিগমের। কোভিডের আগে নিগমের আয় ছিল ১৬ কোটি। এখন লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ১৬ কোটি টাকা, যা বাস্তবে অসম্ভব।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।