
পুজো কমিটিগুলিকে সরকারি অনুদান দেওয়ার শর্ত হিসেবে মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখতেই হবে! এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে। তাঁর দাবি, “যে টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ব্যানার থেকে আসছে, সেখানে অবশ্যই দিদির ছবি থাকতে হবে। ছবি না রাখলে এবার থেকে আমি কোনও পূজোয় এক টাকাও দেব না।” এই বক্তব্যের পরই জেলায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, নন্দকুমার থানার ব্যবস্থাপনায় পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়ার অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে বক্তব্য দিতে উঠে সুকুমার দে হঠাৎ করেই এহেন হুঁশিয়ারি দেন। এমনকি একাধিক কমিটির সভাপতি ও উদ্যোক্তাদের নাম অনুদানের তালিকা থেকে কেটে দেওয়ারও হুমকি দেন বিধায়ক।
সুকুমার দে-র বক্তব্য, “পূজোর জন্য যে সরকারি টাকা দেওয়া হচ্ছে, সেটা মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি মণ্ডপে না রাখলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, কয়েক হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়। কিন্তু যেসব কমিটি নিয়ম মানবে না, তাঁদেরকে আগামী বছর অনুদান দেওয়া হবে না।
তাঁর কথায়, "২৫ হাজার তেহেক ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, ইলেকট্রিকের ৮৫ শতাংশ ছাড় - আমরা দিয়েছি এটা। আমি দেখব কারা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়েছে আর কারা দেয়নি। পরিস্কার করে আমি বার্তা দিচ্ছি, আগামী বছর আমি তাদের দেখে নেবো"।
এদিকে, বিধায়কের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিরোধীদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি অর্থের বিনিময়ে রাজনৈতিক প্রচারের শর্ত চাপিয়ে দেওয়া একেবারেই অনভিপ্রেত। পুলিশ প্রশাসনের বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়ার কথা সরাসরি বলা হয়নি। ফলে বিধায়কের এই নির্দেশ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বলে মনে করছে বিরোধীরা।
জানা গিয়েছে, নন্দকুমার ব্লকের বেশ কিছু বড়ো পূজা কমিটি ইতিমধ্যেই বিধায়কের নির্দেশ মানতে অনীহা প্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সরকারি অনুদান দিয়ে পূজা কমিটিগুলিকে দলীয় প্রচারের হাতিয়ার করা হলে সেটা এক ধরনের প্রশাসনিক অপব্যবহার হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন