সুদীপ্ত সেনের থেকে জোর করে ৮০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন মুকুল - সারদার পরিচালন পর্ষদ সদস্যের দাবি

মনোজ কুমার নাগেল দীর্ঘদিন ধরে তিনি জেলে ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। ২০১৩ সালে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট তাঁকে প্রথম গ্রেফতার করে।
মনোজ কুমার নাগেল, মুকুল রায়
মনোজ কুমার নাগেল, মুকুল রায়ফাইল চিত্র
Published on

এক কোটি-দু'কোটি নয়, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনকে চাপ দিয়ে একদিনে ৮০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মুকুল রায়। এমনটাই অভিযোগ তুললেন সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত সারদা গোষ্ঠীর পরিচালন পর্ষদের অন্যতম সদস্য মনোজ কুমার নাগেল। তাঁর বিরুদ্ধে ৪৪টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি জেলে ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।

মনোজ নাগেল বলেন, "সুদীপ্ত সেন সেদিন কোন নেতা, কত টাকা নিয়েছেন নাম বলেছেন। কিন্তু একজনের নাম মনে করতে পারছিলেন না। আমি বলছি আমার সামনেই স্রেফ একদিনে সুদীপ্ত সেনকে চাপ দিয়ে ৮০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন মুকুল রায়। সুদীপ্ত সেন তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধেই গাড়ি করে ৮০ কোটি টাকা নগদ দিল্লিতে গিয়ে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তিনি দিতে চাননি, আমাকে বলেছিলেন।"

তিনি আরো বলেন, "একমাত্র একজনের ফোন এলেই তিনি উঠে দাঁড়িয়ে স্যার, স্যার বলতেন। এখন বুঝতে পারছি উনি আসলে মুকুল রায়। সারদা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর কালীঘাটে গিয়েছিলাম আমি। সেখান থেকে বলা হল মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করতে। মুকুল রায় বলেন, তুমি ভালো ছেলে। দেখা করো রাজীব কুমারের সঙ্গে। তোমার কিছু হবে না। আর দেখা করতেই আমাকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়।"

দুর্গাপুর-আসানসোল ডিভিশনে সারদার কারবার দেখাশোনা করতেন মনোজ নাগেল। সারদা রিয়েলটি-সহ একাধিক মামলার চার্জশিটে নাম রয়েছে তাঁর। ২০১৩ সালে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট তাঁকে প্রথম গ্রেফতার করে।

২০১৫ সালের সারদা রিয়েলিটি মামলার প্রথম চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। কিন্তু এতদিন পরও চূড়ান্ত চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায় ছাড়া আর কেউ জেলেও নেই। সবাই জামিনে মুক্ত। তাহলে এতদিন পর কেন মুখ খুলছেন মনোজ নাগেল? তাঁর জবাব, 'আগে বললে বলা হত ভোটের জন্য বলা হচ্ছে। তাই ভোটের পরই বললাম। চোখের সামনে দেখছি মুকুল রায় ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ আমরা জেল খেটেছি।'

এসব নিয়ে যদিও মুকুল রায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। শুধু সারদা কাণ্ড নয়, তৃণমূলের আয়-ব্যয়ের অডিট রিপোর্টেও কেলেঙ্কারি করেছিলেন মুকুল রায় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বারবার মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর স্পষ্ট কথা, চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মাথা মুকুল রায়। বর্তমানে সেই মুকুল রায়কেই আবার গোটা দেশজুড়ে তৃণমূলের সংগঠন বাড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in