জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ধর্ষণকাণ্ডে উঠে এলো আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার সাথে সাথেই নির্যাতিতার বাবা সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন, ভরসা ছিল না রাজ্য পুলিশে। কিন্তু হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে নির্যাতিতার পিতা আস্থা রাখতে চাইছেন রাজ্য পুলিশস-প্রশাসনের উপরই। তিনি বলেন সিবিআই চান না, পুলিশের তদন্তেই খুশি।
হঠাৎ কেন সিদ্ধান্ত বদল? সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, "নির্যাতিতার বাবা সিবিআই চাইছেন না । আমি জেনেছি। তাই বিষয়টি একটু খতিয়ে দেখতে সময় দিক আদালত।" কিন্তু এই পুরো বিষয়টির বিরোধীতা করে আইনজীবি জানান, "আমি অবজেকশন দিছি। এফআইআর-এ পরিবারের সই জোর করে করানো হয়েছে। লিস্টেও আঙ্গুলের ছাপ জোর করে করানো হয়েছে। তাই সেন্ট্রাল ফরেনসিক দিয়ে পরীক্ষা করা হোক।"
আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের অভিযোগ, চাপে পড়ে নির্যাতিতার বাবা এই দাবি করেছেন। তিনি আরও জানান, যে ভিডিও ক্লিপে নির্যাতিতার বাবা পরিবারের নিরাপত্তার কথা বলে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিল তা আদালতের কাছে পেশ করা হয়েছে। এই মামলার শুনানি ছিল বুধবার বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের অধীনে।
প্রধান বিচারপতি আলাদাভাবে নিজের চেম্বারে নিয়ে গিয়ে কথা বলেন নির্যাতিতার বাবার সাথে। পরবর্তী শুনানি হবে আগামী বুধবার। এইদিন হাইকোর্টে নির্যাতিতার বাবার পক্ষে সওয়াল করেন এজি কিশোর দত্ত।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সারা রাজ্য জুড়ে ঘটে চলা একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, সিনিয়র আইপিএস অফিসার দিয়েই আপাতত ময়নাগুড়ি ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত চলবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অজয় রায় নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ময়নাগুড়িকাণ্ডে। স্থানীয় এলাকার লোকজন বলেন গত ২৮ ফেব্রুয়ারী ওই ব্যক্তি এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এলাকাবাসী থানায় অভিযোগ করায় ওই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে নাবালিকার বাড়িতে চড়াও হয় দুই যুবক। ক্রমাগত অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, অভিযোগ না তুলে নিলে গোটা পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় ওই নাবালিকা, তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে ১২ দিন পর তার মৃত্যু হয়।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।