সেলুলার জেলে বন্দী অধিকাংশ বিপ্লবীই কমিউনিস্ট হয়েছিলেন, RSS-BJP তাঁদেরকেই 'গদ্দার' বলে - ইয়েচুরি

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দফতরে স্বাধীনতা সংগ্রামী কমিউনিস্ট নেতা সুকুমার সেনগুপ্তের পূর্ণাবয়ব মূর্তির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমনই বললেন সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক।
সীতারাম ইয়েচুরি
সীতারাম ইয়েচুরিফাইল ছবি সংগৃহীত

দেশকে ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্বের রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত রুখতে হবে। তমলুকে সিপিআইএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দফতরে স্বাধীনতা সংগ্রামী কমিউনিস্ট নেতা সুকুমার সেনগুপ্তের পূর্ণাবয়ব মূর্তির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমনই আহ্বান জানালেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন সুকুমার সেনগুপ্ত। রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতার জন্য শহিদ হতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতাসীন, তারা দেশকে ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী দেশে পরিণত করতে চাইছে। কিন্তু তা হতে দেওয়া যায় না। এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।

১৯৩৩ সালে মেদিনীপুরে বার্জ হত্যা মামলায় সুকুমার সেনগুপ্তকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁকে আন্দামান সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। ১৯৩৮ সালে জেলে থাকাকালীন তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। ১৯ বছর ৯ মাস তিনি জেলে কাটান।

সীতারাম বলেন, সাভারকরের মতো তিনি ব্রিটিশদের কাছে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাননি। মেদিনীপুরের মাটি ক্ষুদিরাম, মাতঙ্গিনী হাজরা, সতীশ সামন্ত, সুকুমার সেনগুপ্তদের মাটি। বার্জ হত্যার পর ব্রিটিশরা আর কোনও ইংরেজকে এখানে জেলা কমিশনার করে পাঠায়নি। ভারতীয়দের নিয়োগ করেছিল। জেল মুক্তির পর সুকুমার সেনগুপ্ত সর্বত্র কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলায় অগ্রণী ভূমিকা নেন। আন্দামান জেলে ৮০ শতাংশ বন্দি ছিলেন বাংলা ও পঞ্জাব থেকে। তাঁদের তিন চতুর্থাংশই কমিউনিস্ট পার্টির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অথচ আরএসএস-বিজেপি প্রচার করে 'কমিউনিস্টরা গদ্দার'।

ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্ডিয়ার ক্ষমতাসীন দল গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভকে ভেঙেই হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইছে। ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা হল আমাদের সংবিধানের চারটি স্তম্ভ। মোদি সরকার যেভাবে দেশের লাভজনক সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে চাইছে, তাতে অর্থনৈতিক স্বমির্ভরটা থাকবে কী করে?

আরও বলেন - কর্পোরেট বন্ধুদের মুনাফা ব্যবস্থা করতে ছয় লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ বিক্রির পরিকল্পনা করেছে। যারা ট্রেন কিনে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়ে, রাস্তা কিনে যাতায়াতে টোল বসিয়ে, বিদ্যুৎ পরিকাঠামো কিনে মাশুল বাড়িয়ে জনগণের উপর বোঝা চাপানো হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার পরের কথা এই সরকারের আমলে মহিলা দলিতদের উপর অত্যাচার বেশি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অস্বীকার করে করে মোদি সরকার রাজ্যগুলির অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে নষ্ট করতে ধর্মীয় বিভেদ মূলক প্রচার করছে।

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মহাভারত এবং মেডিকেল কলেজে গণেশের মাথায় প্লাস্টিক সার্জারি গল্প শোনাচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই ইউএপিএ ধারায় গ্রেপ্তার করছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। উপস্থিত বিমান বসু বলেন, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম তো করতেই হবে।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in