প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতা ব্যানার্জীর
প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতা ব্যানার্জীরগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন

অপরিকল্পতি ভাবে জল ছাড়ছে DVC - ৮ জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মোদীকে চিঠি মমতার, পাল্টা জবাব কেন্দ্রের

People's Reporter: মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ডিভিসি পরিচালিত মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে অপরিকল্পিত ভাবে ৫ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
Published on

রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ৪ পাতার চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, অপরিকল্পিতভাবে ডিভিসি জল ছাড়ার জেরে এই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠির ছবি দিয়ে মমতা ব্যানার্জী লেখেন, "আমি আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছি যে, ডিভিসি নিয়ন্ত্রিত বাঁধ থেকে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে এক বড় বিপর্যয় ঘটেছে — যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি"।

তিনি আরও লেখেন, "এই ম্যান মেড বন্যা, যা ২০০৯ সালের পর থেকে নিম্ন দামোদরে সবচেয়ে ভয়াবহ এবং বাংলার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছে। বারবার সতর্ক করার পরেও কেন্দ্র ডিভিসি'র প্রযুক্তিগত, যান্ত্রিক এবং ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতাগুলিকে উপেক্ষা করেছে। এই চরম অবহেলা যদি অব্যাহত থাকে, তবে বাংলা বাধ্য হবে ডিভিসি'র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে"।

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, "ডিভিসি পরিচালিত মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে অপরিকল্পিত ভাবে পাঁচ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ বিপর্যস্ত। এত জল ডিভিসি আগে কখনও ছাড়েনি। নিম্ন দামোদর এবং সংলগ্ন এলাকা বন্যায় ভেসে গিয়েছে।''

প্রধানমন্ত্রীকে তিনি আরও জানান, "গত ১৭ সেপ্টম্বর আমি নিজে ডিভিসি চেয়ারম্যানের সাথে ফোনে কথা বলেছিলাম। কিন্তু তারপরেও ক্রমাগত জল ছাড়া হয়েছে। ১৬ সেপ্টম্বর রাতে ৯০,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। তার ৯ ঘন্টার মধ্যে ২,৫০,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসি কোনও আলোচনাই করেনি রাজ্য সরকারের সাথে। গত ১০ বছর ধরে বলছি ডিভিসির উচিত জলাধার সংস্কার করার। কিন্তু তা করছে না ডিভিসি। নীতি আয়োগের বৈঠকেও এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি"।

মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠির পাল্টা উত্তর দিয়েছে কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রক। চিঠিতে জল শক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল জানিয়েছেন, দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিভিআরআরসি)-র মাধ্যমে মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধ পরিচালিত হয়। এই কমিটিতে ডিভিসি, জল কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জল ছেড়েছে ডিভিসি।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in