
দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হলেন মালদার তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলা। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেই মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে মালদার ইংরেজবাজারে ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার কাছে দাঁড়িয়েছিলেন দুলাল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সেই সময় বাইকে চেপে তিন জন দুষ্কৃতি প্লাইউডের কারখানার বাইরে দুলালকে তাড়া করে। তৃণমূল কাউন্সিলর কারখানায় ঢুকতেই তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতিরা (যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)।
একটা গুলি দুলাল বাবুর মাথার কাছে লাগে। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করানো হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই পরে মৃত্যু হয় তাঁর।
দুলালের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের সমাজ মাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘আমার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং জনপ্রিয় নেতা বাবলা সরকার আজ খুন হয়েছেন। তৃণমূলের গোড়ার দিন থেকে উনি এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকার দলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। বাবলা কাউন্সিলর হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছেন। এই ঘটনার কথা জেনে আমি দুঃখিত এবং হতবাক। অপরাধীদের দ্রুততার সঙ্গে ধরা উচিত’।
এরপরে এদিন দুপুরে নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে দুলালের খুনের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার পরিচিত সহযোদ্ধা, দীর্ঘ দিন আমার সঙ্গে কাজ করছে, বাবলা সরকার আজ খুন হয়েছে’। এরপরেই দুলালের খুনের জন্য রাজ্য পুলিশের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘পুলিশের গাফিলতিতেই এটা হয়েছে। ওঁকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম। ওঁর উপর আগেও হামলা হয়েছে। ও নিরাপত্তা পেত। কিন্তু সেই নিরাপত্তাও তুলে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ সক্রিয় হলে এটা হতো না’।
এখানেই শেষ নয়। রাজ্যের পুলিশের ব্যবস্থা নিয়ে মমতা আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিয়ম করে দিয়েছে তিন বছর অন্তর বদলি করতে হবে। এই নিয়মের জালে আমরা ফেঁসে গিয়েছি। যে তিন বছরের জন্য কাজ করতে যাচ্ছে, সে ভাবছে আমার তো ২-৩ বছরের কাজ। আমি আমারটা করে দিয়ে চলে যাই। আমার কী দরকার বাড়তি তৎপর হওয়ার। এখন থেকে নিয়ম করা হচ্ছে, কারও আমলে কোনও অনৈতিক কাজ হয়ে থাকলে বদলির পর সে যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে ধরা হবে’।
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং সাবিনা ইয়াসমিনকে মালদাতে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন