নেই পড়ুয়া, বন্ধ হওয়ার মুখে দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক প্রাথমিক স্কুল! অন্য চিত্র মুর্শিদাবাদে

People's Reporter: দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষা সাংসদ অজিত নায়েক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘কাছাকাছি প্রায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে বহু বেসরকারি স্কুল হয়েছে। বেসরকারি স্কুলে সুবিধা বেশী পাচ্ছে’।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিসৌজন্যে - ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি বোর্ডের ওয়েবসাইট
Published on

আছে ক্লাসরুম। ক্লাসরুমে রয়েছে বেঞ্চ, চক, ডাস্টার। পড়ানোর জন্য রয়েছেন একাধিক শিক্ষক। অভাব শুধু পড়ুয়ার। কোনও বিদ্যালয়ে আসে দু-পাঁচজন পড়ুয়া। আবার কোনও বিদ্যালয় পড়ুয়া শূন্য। পড়ুয়ার অভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগণার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে।

সরকারি হিসেব বলছে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার ২০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা সবচেয়ে কম। জানুয়ারি মাসে স্কুলে শুরু হবে নতুন সেশন। তার মধ্যে এই ছবির বদল না হলে পড়ুয়ার অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে জেলার অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয়। এবিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষা সাংসদ অজিত নায়েক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘কাছাকাছি প্রায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে বহু বেসরকারি স্কুল হয়েছে। বেসরকারি স্কুলে সুবিধা বেশী পাচ্ছে’।

জেলার এই অবস্থা নিয়ে সরব বিরোধীরা। এই নিয়ে এসএফআই-এর এক ছাত্রনেতা বলেন, ‘২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গোটা রাজ্য জুড়ে প্রাথমিক এবং উচ্চ-প্রাথমিক স্কুল মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার স্কুল বন্ধের মুখে। এর মধ্যে আমাদের জেলায় সংখ্যাটা ৫০০–এর কাছাকাছি। রাজ্য সরকার এই নিয়ে উদাসীন’।

তবে এর পাল্টা জবাব দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি মইদুল ইসলাম বলেন, ‘কোনও স্কুল বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও নেই। খবর অনুযায়ী, কিছু স্কুলে ছাত্র সংখ্যা কমেছে। যাতে ছাত্র সংখ্যা বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে’।

তবে আরেক জেলা মুর্শিদাবাদের ছবিটা উল্টো। সে জেলায় প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ছাত্র আছে, কিন্তু নেই শিক্ষক। পরিস্থিতি এমন, রান্না সেরে পরীক্ষায় গার্ড দিতে হচ্ছে মিড ডে মিল কর্মীকে। এমনই ছবি উঠে এসেছে হরিহরপাড়া শ্রীপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। জানা যাচ্ছে, ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৭১। কিন্তু নেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক। পড়াশোনা থেকে স্কুলের দেখভালের দায়িত্ব আছেন একজন অতিথি শিক্ষক।

মুর্শিদাবাদের স্কুলের বেহাল দশা নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। এবিটিএ –র জেলা সভাপতি জুলফিকার আলি বলেন, ‘মিড ডে মিল কর্মীকে স্কুলের পরীক্ষায় গার্ড দিতে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার হাল বেহাল। এটাই এই ঘটনা প্রকাশ করে’।

এই অতিথি শিক্ষকের মেয়াদ আর এক বছর। এরপর স্কুল চলবে কীভাবে? এ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও এই নিয়ে তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি দিলীপ সিংহ রায় বলেন, ‘শিক্ষকের কোনও এক দরকারে ওই কর্মীকে সাময়িক ভাবে দাঁড় করানো হয়েছিল, যাতে বাচ্চারা কোনও গণ্ডগোল না করে। আগামী জানুয়ারিতে তিনজন নতুন শিক্ষক আসছে’।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in