
পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার পর থেকে দেশজুড়ে পাকিস্তানিদের চিহ্নিত করে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে কেন্দ্র সরকার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে বসবাসকারী পাকিস্তানিদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর দাবিতে সোমবার বাঁকুড়া জেলাশাসক দফতর ঘেরাও করে বিজেপি। সেখান থেকে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সাংসদের দাবি, জমি-বাড়ি বিক্রি করলে শুধু সনাতনীকেই করতে হবে। সনাতনী ছাড়া বাড়িভাড়াও দেওয়া যাবে না।
রাজ্য থেকে অবিলম্বে পাকিস্তানিদের চিহ্নিত করে তাঁদের দেশে পাঠানোর দাবিতে সোমবার বাঁকুড়ার জেলাশাসক দফতরে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সেখানে থেকে বিষ্ণুপুরের সাংসদ জানান, ‘‘সনাতনী ছাড়া জমি বা বাড়ি বিক্রি করবেন না। সনাতনী না-হলে তাঁকে বাড়ি ভাড়াও দেবেন না”।
তাঁর কথায়, ‘‘এ রাজ্যের অনেকে এখনও পরিস্থিতি বুঝতে পারছেন না। আপনি বাড়ি বানিয়ে হয়তো ভাবছেন, সারা জীবন সেই বাড়িতে থাকবেন। কিন্তু আপনি তা পারবেন না। আপনারা ছেলে মেয়েরা বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যাবে। সেই অবস্থায় আপনি মারা গেলে বাড়িটির দখল নেবে রোহিঙ্গারা। তাই আমার অনুরোধ, দয়া করে সনাতনী ছাড়া কাউকে জমি বিক্রি করবেন না। সনাতনী ছাড়া অন্যদের বাড়ি ভাড়া দেবেন না”।
এরপরে নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার ৯০ শতাংশ ঘর এভাবেই দখল হয়ে গিয়েছে। সেই ঘটনা যাতে বাঁকুড়া তথা রাজ্যের আর কোথাও না হয় তাই সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলছি, সনাতনী হিন্দু ছাড়া জমি বিক্রি বা বাড়ি ভাড়া দেবেন না”।
সৌমিত্র খাঁয়ের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে একজন জনপ্রতিনিধি প্রকাশ্যে এমন কথা বলতে পারেন না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এই দেশের ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে সাংসদের মন্তব্য করা উচিত”।
যদিও এর পাল্টা সাংসদের দাবি, ‘‘সনাতনী নন যাঁরা, তাঁরা আমাদের ঘরছাড়া করার নিদান দিলে আমাদের এই ধরনের মন্তব্য করাটাই স্বাভাবিক”।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন