Hooghly: হুগলিতে সেপটিক ট্যাংকে কাজ করতে নেমে ২ শ্রমিকের মৃত্যু, অসুস্থ আরও ২

পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এছাড়াও অসুস্থ অবস্থায় আরও দুই শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

এক নির্মীয়মাণ নার্সিংহোমের সেপটিক ট্যাংকে কাজ করতে নেমে মৃত্যু হলো দুই শ্রমিকের। রবিবার হুগলি জেলার আরামবাগ থানার নবপল্লি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এছাড়াও অসুস্থ অবস্থায় আরও দুই শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী জানা গেছে, নবপল্লি এলাকায় একটি নার্সিং হোম নির্মাণের কাজ চলছিল। রবিবার নার্সিংহোমের সেপটিক ট্যাঙ্কের কাজ করার জন্য কয়েকজন শ্রমিক এসেছিলেন। প্রথমে একজন শ্রমিক ট্যাংকের ভেতরে নামেন। কিন্তু বহুক্ষণ তিনি না ফেরায় আর এক শ্রমিক নিচে নামেন। বহুক্ষণ কেটে গেলেও তিনিও বাইরে আসেননি। এরপর তাঁদের সন্ধানে আরও দুই শ্রমিক নিচে নামেন। কিন্তু তাঁদেরও আর ফিরতে দেখা যায়নি।

এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং অন্যান্য শ্রমিকদের সহায়তায় চারজনকে উদ্ধার করে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হলে দু'জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকি দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছেন মৃত দুই শ্রমিকের নাম হানিফ খান এবং রঘুনাথ রায়। রঘুনাথ রায় হুগলির খানাকুলের সেকেন্দারপুরের বাসিন্দা। হানিফ খানের বাড়ি বাঁকুড়ার বৈতলে।

সেপটিক ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসের কারণে শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন নিহতদের পরিবার এবং অন্যান্য শ্রমিকরা। এই কাজে আগে থেকে কোনো বিশেষজ্ঞ বা দমকলের পরামর্শ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, প্রথম শ্রমিকের সময়ই যদি সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতো না।

এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন সিটু (CITU)। এই ঘটনা প্রসঙ্গে নির্মাণ কর্মী ইউনিয়নের হুগলি জেলার সম্পাদক তরুণ ঘোষ বলেন, "নির্মাণ শ্রমিকদের কাজে এরকম ঝুঁকি থাকে বলেই তাঁদের সামাজিক সুরক্ষার ন্যূনতম মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার দাবিতে রাজ্য সরকারের কাছে বহুবার দরবার করেছি আমরা। কিন্তু সরকার এই বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন। বর্তমান সরকার সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা তুলে দিতে চাইছে। সামাজিক সুরক্ষার তহবিলের অর্থ অন্য খাতে স্থানান্তরিত করছে। এই কারণে নির্মাণ শ্রমিকরা সামাজিক সুরক্ষার ন্যূনতম সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।"

এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আরামবাগ থানার পুলিশ। ঠিক কী কারণে ওই শ্রমিকদের মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখছে তারা।

বর্তমান বছরের ৬ এপ্রিল রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ মহেশ পোদ্দারের এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরেন্দ্র কুমার লিখিতভাবে জানান, গত তিন বছরে ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং-এ মৃত্যুর কোনও ঘটনা ঘটেনি। যদিও সেপটিক ট্যাঙ্ক এবং ভূগর্ভস্থ নালা পরিষ্কার করতে গিয়ে ১৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ধরণের মৃত্যুতে শীর্ষে তামিলনাড়ু। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানান, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে করা দুই সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে দেশে ৫৮,০৯৮ এই ধরণের ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। যে সংখ্যা উত্তরপ্রদেশে সর্বাধিক।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in