WB Flood: ক্রমে ভয়াবহ হচ্ছে মেদিনীপুরের বন্যা পরিস্থিতি, মৃত ১, ক্ষতিগ্রস্ত বহু

People's Reporter: দাসপুরে একটি দোতলা বাড়ি ক্রমে জলে তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটির একাংশ ভেঙে পড়েছে। কেশপুরে বন্যা পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে এক ১০ বছরের শিশুর।
বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী
বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী ছবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুক পেজের ভিডিও থেকে স্ক্রীনশট
Published on

ক্রমে ভয়াবহ হচ্ছে মেদিনীপুরের বন্যা পরিস্থিত। কাঁসাই নদীর বাঁধ ভেঙে দাসপুর, ডেবরা, পাঁশকুড়ার মতো অঞ্চলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। দাসপুরে একটি দোতলা বাড়ি ক্রমে জলে তলিয়ে গেছে। কেশপুরে বন্যা পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে এক ১০ বছরের শিশুর। বুধবারই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলায় পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার রাতে মমতা পশ্চিম মেদিনীপুরেই থাকবেন।

ডেবরায় লোয়াদা সদর ঘাটের মুখে কাঁসাই নদীর বাঁধ উপচে জল ঢুকতে শুরু করেছে গ্রামে। জল নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার রাত থেকে বালির বস্তা দিয়ে জল ঠেকানোর চেষ্টা করছিলেন স্থানীয়েরা। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। ক্রমে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। ডেবরা থানার পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে, জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, দাসপুরের মতো এলাকাও। জানা যাচ্ছে, দাসপুরে ২ ব্লকের গৌরা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামপুর এলাকায় বুধবার জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে দোতলা বাড়ির একাংশ। প্রশাসনের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন এবং বাড়ির বাসিন্দারা জিনিসপত্র সরানোর কাজ করছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে এই মুহূর্তে ৪৪টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। তার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে। প্রায় ১০ হাজার ত্রিপল ইতিমধ্যে বিলি করা হয়েছে।

জেলাশাসক কাদরি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বন্যাকবলিত এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রশাসনিক স্তরের আধিকারিকদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরাও খোঁজ নিচ্ছেন। বাঁধ মেরামতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বাঁধের কাজ শুরু হবে।’’

কেশপুরে মঙ্গলবার জলের তোড়ে এক নাবালক ভেসে গিয়েছিল। পরে তার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তার নাম শেখ গিয়াসউদ্দিন (১০)। আনন্দপুর থানার জগন্নাথপুর এলাকায় ওই নাবালকের বাড়ি। মঙ্গলবার দুপুরে বন্যার জল দেখতে গিয়ে রাস্তা পারাপার করার সময়ে জলের তোড়ে ভেসে যায় তিন নাবালক। দু’জন সাঁতরে উঠে এলেও একজন উঠতে পারেনি।

অন্যদিকে, বুধবার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাওড়া এবং হুগলির বিভিন্ন এলাকায় যান মুখ্যমন্ত্রী। হুগলি থেকে মেদিনীপুরে যান তিনি। মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে রাতে থাকতে পারেন মমতা। বৃহস্পতিবারও ওই জেলার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করবেন তিনি।

ঘাটালে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘ঘাটালে আমরা যে পর্যন্ত এসেছি, তার পর আর যাওয়া যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বারে জল বেশি ছাড়া হয়েছে। ২০০৯ সালের পর এত জল আর ছাড়া হয়নি। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে ডিভিসি ঝাড়খণ্ডকে বাঁচায়। সব জল ছেড়ে দেয়। আমরা এ বারে হাত জোড় করে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। আমরা স্তম্ভিত। এটা ‘ম্যান মেড’ বন্যা। বাংলাকে ইচ্ছা করে বঞ্চনা করা হচ্ছে। ২০ বছর ধরে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পড়ে আছে। রাজ্য সরকার করছে। অন্তত দু’বছর লাগবে কাজটা করতে। দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প।’’

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in