

অবশেষে দলুয়াখাকি গ্রামে ঢুকতে পারলো সিপিআইএম প্রতিনিধি দল। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও একাধিকবার পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বাম নেতৃত্বকে বলে অভিযোগ সিপিআইএম নেতা তথা আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জির। দীর্ঘ বচসার পর ত্রাণ নিয়ে অবশেষে সবকিছু হারানো পরিবারগুলির কাছে পৌঁছাতে পারলো সিপিআইএম।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জয়নগরের দলুয়াখাকি গ্রামে সিপিআইএম প্রতিদিন দলকে এর আগে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণ দেখিয়ে বাম নেতৃত্বকে আটকেছিল প্রশাসন। তাই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে গিয়েছিল নেতৃত্ব। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিপিআইএমের প্রতিনিধি দলকে বাধা দেওয়া হয়। যার তীব্র প্রতিবাদ জানান বাম নেতৃত্ব।
আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জি নিজের ফেসবুকে লেখেন, "সাথে কলকাতা হাইকোর্টের অর্ডার, তারপরেও দলুয়াখাকি গ্রামে ঢুকতে তিনবার আটকালো এস.ডি.পি.ও-র নেতৃত্বে থাকা পুলিশ। সব বাধা টপকে এখন দলুয়াখাকি পৌঁছলাম আমরা। কোনো সভ্য সমাজে এ জিনিস চলতে পারেনা"।
সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গাঙ্গুলি, শমীক লাহিড়ী এবং সায়ন ব্যানার্জি সহ মোট পাঁচজন সিপিআইএম-র প্রতিনিধি এদিন দলুয়াখাকি গ্রামের মানুষদের জন্য ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের দেওয়া ত্রাণের মধ্যে ত্রিপল, কিছু খাবার এবং বাড়ি ছাওয়ার জন্য টিন ছিল।
বামেদের পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে জানানো হয়, "এই ত্রাণ দেওয়ার জন্য অনেক মানুষ আমাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতে আরও সাহায্য করবো। গরীব খেটে খাওয়া মানুষগুলো যাতে পুনরায় তাঁদের জীবিকা শুরু করতে পারেন আমাদের তরফ থেকে সেই প্রচেষ্টাও চালানো হচ্ছে।"
ত্রাণ সামগ্রী পেয়ে খুশি গ্রামবাসীরাও। আক্রান্ত এক পরিবারের সদস্য বলেন, "ত্রাণ পেয়ে অনেকটাই সুবিধা হলো। শীতকালে ছোটো ছোটো বাচ্চাদের নিয়ে থাকার জায়গা নেই। বাড়ির ছাদ টুকুও পুড়িয়ে দিয়েছে। নতুন করে বাড়ির ছাদ হবে এটা সত্যিই খুশির খবর। সরকার থেকেও ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে বিশেষ কিছু লাভ হয়নি।"
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রথম কোনো রাজনৈতিক সংঠন হিসেবে দলুয়াখাকি গ্রামে প্রবেশ করেছিল বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। ওই গ্রামের পড়ুয়াদের জন্য বই, খাতা, পেন পেন্সিল বিতরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১২ নভেম্বর দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাইফুদ্দিন লস্কর খুনের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দলুয়াখাকি গ্রাম। ওই গ্রামে একের পর এক সিপিআইএম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন