প্রকাশ্যে আনা হল রাজ্যপালের সঙ্গে দেবাঞ্জন ঘনিষ্ঠ দেহরক্ষীর ছবি! ছবি বিতর্কে পাল্টা চাপ তৃণমূলের

একটি ছবিতে দেবাঞ্জনের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁর দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্য নামক ব্যক্তিকে। দ্বিতীয় ছবিতে আবার সেই একই ব্যক্তিকে রাজপালের একটি পারিবারিক ছবিতে দেখা গিয়েছে।
প্রকাশ্যে আনা হল রাজ্যপালের সঙ্গে দেবাঞ্জন ঘনিষ্ঠ দেহরক্ষীর ছবি! ছবি বিতর্কে পাল্টা চাপ তৃণমূলের
ছবি- তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ
Published on

ছবি বিতর্কে তৃণমূলের পাল্টা ছবি প্রকাশ! প্রকাশ্যে নিয়ে আনা হল রাজ্যপালের সঙ্গে দেবঞ্জন ঘনিষ্ঠ দেহরক্ষীর ছবি। বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূল ভবন থেকে এই ছবি সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরেন দলের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। ছবি দেখিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেবাঞ্জনের সঙ্গে রাজ্যপালের যোগ সাজসের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে সুখেন্দু শেখর বলেন, 'দেবাঞ্জনের দেহরক্ষীর রাজভবনে নিয়মিত যাতায়াত ছিল।'

পাশাপাশি জৈন হাওয়ালা মামলা নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে কিছু তথ্যপ্রমাণ সামনে এনে গুরুতর কিছু অভিযোগ তোলা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সরাসরি প্রশ্ন তোলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ তোলার পরই নাকি মৃত্যু হয়েছে জৈন হাওয়ালা মামলায় অন্যতম অভিযুক্তের। এই মৃত্যু কি নিছক কাকতালীয় ঘটনা? যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি, ছবি বিতর্কের ইতি ঘটাতে শাসকদলের এই পদক্ষেপ।

সম্প্রতি দেবাঞ্জনের সঙ্গে ছবি বিতর্ক নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েটের তারই পাল্টা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে চাপে রাখতে তৃণমূলের নতুন কৌশল। কারণ বুধবারই নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন, অনেকেই অনেক সময় সেলফি বা কোনো অনুষ্ঠানের মাঝে ছবি তুলে নেয়। কিন্তু তার মানে এটা নয় কেউ কারুর সঙ্গে যুক্ত। এ প্রসঙ্গে তিনি নিজের বিমানের ঘটনার উল্লেখ করেছেন। এদিন তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ তথা চিফ হুইফ সুখেন্দু শেখর রায় মূলত দু’টি ছবি প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। যেখানে একটি ছবিতে দেবাঞ্জনের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁর দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্য নামক ব্যক্তিকে। দ্বিতীয় ছবিতে আবার সেই একই ব্যক্তিকে রাজপালের একটি পারিবারিক ছবিতে দেখা গিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শোনা যাচ্ছে যে এই নিরাপত্তারক্ষীর মাধ্যমে নাকি কোনও বিশেষ ব্যক্তির কাছে উপহারও নাকি যেত।' গোটা বিষয়টি তদন্তকারী সংস্থার গোচরে আনা হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। যদি এই ছবি সত্যি হয়ে থাকে তবে তা দেশের জন্য ভয়ঙ্কর বলে দাবি করেন সুখেন্দুবাবু। যদিও তৃণমূলের প্রকাশ করা এই ছবির সত্যতা যাচাই করা হয়নি। অন্যদিকে দীর্ঘ কয়েক দশক পর ফের একবার জাতীয় রাজনীতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে জৈন হাওয়ালা মামলা। এই মামলায় রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম জড়িয়ে আছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী। রাজ্যপাল নিজেকে ক্লিনচিট দিলেও রাজ্যের শাসকদলের আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে।

এদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলার পরই নাকি মৃত্যু হয়েছে জৈন হাওয়ালা মামলায় অন্যতম অভিযুক্তের। এই মৃত্যু কি নিছক কাকতালীয় ঘটনা? এ প্রসঙ্গে এদিন সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনের অংশ বিশেষ দেখিয়ে তৃণমূল নেতা সুখেন্দু শেখর বলেন, 'গতকাল দিল্লির একটি বিখ্যাত একটি সংবাদপত্রে একটি মৃত ব্যক্তির ছবি বেরিয়েছে। অর্থাৎ, ২৯ জুন রাতে তিনি মারা গিয়েছেন। ওঁর নাম ছিল সুরেন্দ্র জৈন, যিনি জৈন ডায়রি এবং হাওয়ালা কেন্দ্রের মাথা। যার কাছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর থেকে টাকা আসত। আর আমরা অভিযোগ করার পরে তিনি মারা গেলেন। এটা কাকতালীয় নাকি প্যানিক অ্যাটাক, আমরা বলতে পারব না। কিন্তু উনি মারা গেলেন, আরেকজন সাইলেন্ট মোডে চলে গেলেন। দু’টোর মধ্যে কিছু সংযোগ আছে বলে মনে হচ্ছে। জৈন ডায়রিতে তাঁর নাম রয়েছে সেটা আমরা প্রকাশ্যে আনার পরও তিনি আর এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। যিনি প্রত্যেক মুহূর্তে টুইট করেন, যিনি প্রতি মুহূর্তে অজস্র কথা বলেন, তিনি একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন ব্যাপারটা নিয়ে।'

পাশাপাশি লেখক সঞ্জয় কাপুরের লেখা ‘ব্যাড মানি ব্যাড পলিটিক্স’ শীর্ষক একটি বইয়ের কথাও উল্লেখ করা হয় এ দিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে। সেই বইয়ের একটি পাতাতেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জগদীপ ধনখড়ের নাম এবং ৫.২৫ কোটি টাকা অঙ্ক লেখা রয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। 'এই জগদীপ ধনকর এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এক ব্যক্তি নয়তো?' আবারও প্রশ্ন তৃণমূলের।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in