পুলিশের জালে ভুয়ো CBI আধিকারিক, এবার গেরুয়া শিবিরের সাথে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ

সিবিআইয়ের স্টিকার ও নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন অভিযুক্ত সনাতন রায়চৌধুরী। ভুয়ো পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে এবার পুলিশের জালে তিনি।
অভিযুক্ত সনাতন রায়চৌধুরী
অভিযুক্ত সনাতন রায়চৌধুরীছবি- সংগৃহীত

ফের ভুয়ো সরকারি আধিকারিকের খোঁজ মিলল, যিনি কিনা নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ঘুরে বেড়াতেন। দেবাঞ্জন দেবের পর আরও এক কীর্তিমানের আবির্ভাবে শোরগোল পড়ল রাজ্যে। পেশায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। কিন্তু সিবিআইয়ের স্টিকার ও নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন অভিযুক্ত সনাতন রায়চৌধুরী। ভুয়ো পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে এবার পুলিশের জালে তিনি।

আদতে বরানগরের বাসিন্দা সনাতনকে পাড়ার সবাই স্যার বলে সম্বোধন করতেন। প্রতিবেশীদের কাছে তাঁর পরিচিতি ছিল সিবিআইয়ের বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে, সুপ্রিমকোর্ট এবং হাইকোর্টে স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল। সবাই তাঁকে একটু অন্য চোখেই দেখতেন। সোমবার রাতে জানা গেল তাঁর গল্প আসলে অন্য।

দেবাঞ্জন দেব, রাধারানী বিশ্বাস সবার সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সংযোগ থাকার ছবি পাওয়া গিয়েছিল। এবার সনাতন চৌধুরীর সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে যোগ থাকার অভিযোগ উঠল। পাওয়া গিয়েছে বিজেপির প্রাথমিক সদস্য পদের রশিদ, পদ্ম ছাপ দেওয়া ভিজিটিং কার্ড। এই ঘটনা নিয়ে সরব তৃণমূল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের কাছ থেকে যে ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গিয়েছে, তাতে লেখা রয়েছে এক্সিকিউটিভ মেম্বার ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস সেল। সেই কার্ডেই আবার দিল্লি সদর দফতরের ঠিকানা লেখা আছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সনাতনের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত প্রতারণা ও অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ করেছেন গড়িয়াহাটের এক বাসিন্দা। গত ৩০ জুন তিনি গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ করেন। জানান, ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্সে ১০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টা করেছে সনাতন। তার বিরুদ্ধে তালতলা পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সনাতন কোনও এক অভিযুক্তকে ছাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী দফতরের নাম করে ফোন করেছিলেন তালতলা থানার এক অফিসারকে। শুধুমাত্র সিবিআই আধিকারিক নয়, নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী উপদেষ্টা দফতরের আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

তখন পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু হয় তার বিরুদ্ধে। এর পাঁচদিন পর থানায় অভিযোগ দায়ের হয় গড়িয়াহাট থানায়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৬ জুলাও পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

কেন নীলবাতি লাগানো গাড়ির ব্যবহার করতেন, তার কোনও জবাব দিতে পারেননি সনাতন। যদিও স্ত্রী বিতস্তা রায়চৌধুরীর দাবি, তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হচ্ছ। তিনি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেন।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in