Deucha Pachami: ক্রমশ জোরালো হচ্ছে খনি বিরোধী আন্দোলন, আদিবাসীদের সভায় উপস্থিত বাম-কংগ্রেস

এদিনের সভার উদ্দেশ্য ছিল, দেউচা পাঁচামীতে কয়লা খনি হবে কি হবে না তা নিয়ে মানুষের মতামত জানা। স্পষ্ট হয়েছে কয়লা খনি চান না মানুষ, দাবি দেউচা পাঁচামী আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটির নেতৃত্বের।
জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটির সভা
জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটির সভাছবি - সংগৃহীত
Published on

কয়লা খনির নামে লুট করতে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। মানুষের জমি কীভাবে হাতিয়ে নেওয়া যায়, তার চক্রান্ত চলছে। এখানে খাদান হলে এলাকার মানুষ বড়জোর কুলির কাজ পাবেন। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোটি কোটি টাকা লুটবেন। শনিবার দেউচা পাঁচামী আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটি একটি সভার ডাক দেয়। সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরামের তরফে এদিন সভায় হাজির রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনটাই বলেন।

এদিন দেওয়ানগঞ্জে দেবশ্রী টুডু, দাসী হাঁসদা, সুরজমণি, মাস্টার মুর্মু, সুকুমার টুডু-সহ আরও অনেকে সম্মিলিত বক্তব্য রাখেন। আওয়াজ ওঠে, ‘এক কোদাল মাটিও এখানে চটাতে দেব না’। সেই আওয়াজে মিশে যায় দেউচা-পাঁচামীর আদিবাসী তল্লাট থেকে শুরু করে তফসিল, সংখ্যালঘু এমনকি সালুকা-মকদমনগর-কাবিলনগর মৌজাতেও। অভিযোগ, রুটি রুজির যন্ত্রণা দূর করার বদলে লুটের পথ চওড়া হচ্ছে।

বিকাশবাবু বলেন, প্রকৃত উন্নয়ন চাইলে এলাকায় রাস্তা হত, স্কুল হত। পরিবেশ ধ্বংস করে কয়লা খনির গড়তে চাইত না। মানুষ জমি দেবে না, বুঝতে পারায় তাদের পেছনে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হল। আমি বলতে চাই, পুলিশের তরফ থেকে যদি মানুষের উপর কোনও জুলুম করা হয়, যদি আমার আদিবাসী ভাইদের থানায় ডেকে ভয় দেখানো হয়, সরকার গুন্ডাবাহিনী নামালে আদিবাসী বোনরা যাঁরা কাঁধে ডান্ডা নিয়ে এসেছেন তাদের ওটাই হবে আত্মরক্ষার অস্ত্র।’

এদিনের সভার উদ্দেশ্য ছিল, দেউচা পাঁচামীতে কয়লা খনি হবে কি হবে না তা নিয়ে মানুষের মতামত জানা। স্পষ্ট হয়েছে কয়লা খনি চান না মানুষ, দাবি দেউচা পাঁচামী আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটির নেতৃত্বের।

দেবশ্রী টুডু বলেন, ‘প্রাণ গেলেও জমি যেতে দেব না।’ পরপর মাইক ধরেছে দাসী হাঁসদা, সুরজমনি, মাস্টার মুর্মু, সুকুমার টুডু আরও বহুজন। সুকুমার টুডুর দীর্ঘদিনের রাগ উগড়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘একটা বাড়ি পেতে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। এসটি সার্টিফিকেট পেতে বছর ঘুরে যায়। এখন কয়লা করে আমাদের দশ থেকে তেরো লাখ টাকা দিবে বলছে। এই টাকা পেতে কাটমানি আর ঘুরতে কতদিন লাগবে?'

বিকাশ ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘কয়লা খনির নামে লুট করতে মানুষকে বোকা বানাতে এক ফিল্ম আর্টিস্টকে আনা হয়। আপনাদের দিকে যারাই চোখ রাঙাবে তাদের ওই ডান্ডা দিয়ে পিটিয়ে দেবেন। মামলা হলে আমি বুঝব।'

মকদমনগরেরই এক যুবক জানিয়েছেন, 'পুলিশ আগের দিন আমাদের ভূমি রক্ষাকমিটির সম্পাদককে ফোনে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে দিয়েছিল যেন গ্রাম থেকে কেউ না যায়। তবুও আমরা ৪০-৪৫ জন সভায় এসেছি। এভাবে মানুষকে আটকে রাখতে পারবে না।’ এদিনের সভায় শামিল সেভ ডেমোক্র্যাসির প্রতিনিধিদের কালো পতাকা দেখায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটির সভা
৪০০ একর বাস্তু জমি, ২১ হাজার বাসিন্দা, দেউচা পাঁচামিতে পুনর্বাসনের সঙ্গে পরিবেশ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in