
এসএসসির প্রকাশিত 'অযোগ্য' চাকরিপ্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুর রহমানের পরিজনদের নাম। যার জেরে সোমবার বিধানসভায় এসে কার্যত অস্বস্তিতে পড়লেন দুই বিধায়ক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যেতে স্বল্প বাক্য ব্যয় করলেন তাঁরা।
আদালতের নির্দেশ মেনে শনিবার সন্ধ্যার পর প্রথম দফায় ১৮০৪ জন অযোগ্য শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। এরপর রবিবার সকালে আরও দু'জনের নাম যুক্ত হয় সেই তালিকায়। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। তালিকায় দেখা যায় নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ শম্পা ঘোষের নাম। তিনি নৈহাটির মহেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া চোপড়ার বিধায়ক হামিদুর রহমানের কন্যা রোশনারা বেগমের নামও রয়েছে। তিনি পড়াতেন কালীগঞ্জ হাইস্কুলে।
এরপর থেকেই শাসক দলের বিধায়কদের আক্রমণ শুরু করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, শীর্ষ স্থানীয় থেকে গ্রামীণ স্তর - সমস্ত জায়গায় তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী, বিধায়কের আত্মীয়স্বজন বেআইনি ভাবে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। বিজেপি শিবিরের অভিযোগ, “এই ঘটনা প্রমাণ করছে যে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল শাসকদলের ছত্রছায়াতেই।”
এদিকে সোমবার বিধানসভায় আসতেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন দুই বিধায়ক। অস্বস্তির মুখে নির্মল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “এ নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। সবটাই আদালতের নির্দেশে হয়েছে। আদালতই ঠিক করবে সত্য-মিথ্যা কী। আইন আইনের পথে চলবে।”
বিধায়ক হামিদুর আবার দায় এড়িয়ে বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোক বলবেন। যা করার করবেন জামাই ও তাঁর পিতা।”
অন্যদিকে, এই তালিকা নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। রাজনৈতিক মহলের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে তালিকা প্রকাশ হওয়ায় এখানে প্রভাব খাটানোর কোনও সুযোগ নেই। ফলে দুই বিধায়ক-সহ নেতাদের পরিবারের সদস্যদের নাম উঠে আসায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে, সোমবারই নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের একাংশ। মঙ্গলবার মামলার শুনানির সম্ভবনা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন