শুভেন্দুর দেহরক্ষীর রহস্য মৃত্যুর তদন্তে CID

সুপর্নার অভিযােগ- শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী ছিলেন, তা সত্বেও তারই মরনাপন্ন নিরাপত্তারক্ষীর জন্যে কেন অনেক দেরীতে অ্যাম্বুলেন্স এলো!
শুভেন্দু অধিকারী, মৃত শুভব্রত চক্রবর্তী
শুভেন্দু অধিকারী, মৃত শুভব্রত চক্রবর্তীফাইল চিত্র
Published on

শুভেন্দুর নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যুর সত্যতা উদঘাটনের জন্য কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের মৃতের স্ত্রীর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের দায়িত্ব পেল সিআইডি প্রতিনিধি দল। সোমবার মহিষাদলের, সরবেরিয়ার মৃত শুভব্রত চক্রবর্তীর বাড়িতে হাজির চার সদস্যের সি আই ডি দল। স্বামীর মৃত্যুর সত্যতা উদঘাটন করতে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানায় লিখিত অভিযােগ দায়ের করেছেন সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী।

সুপর্নার কথা অনুযায়ী- শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তাঁর স্বামী প্রয়াত শুভব্রত চক্রবর্তী। তিনি প্রায় ৬-৭ বছর শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। এবং নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করার সুবাদে কাঁথিতে থাকতেন। ভালোভাবেই স্বামী এবং ২ সন্তানকে নিয়ে দিন কাটছিল সুপর্নার। সুপর্নার অভিযােগ গত ১৩/১০/২০১৮ তে প্রতিদিনের মতই তাঁর স্বামী সকাল ১০ টা নাগাদ ফোন করেন। এবং জানান বাড়ি ফেরার জন্য তৈরি হচ্ছেন এবং ফিরবেন। ফোনের কিছুক্ষণ পর ১০:২০ নাগাদ গুলির শব্দ শোনা যায়।

তার কিছু পর আকস্মিক ভাবে সুপর্নার এক আত্মীয় ফোন করে ১১ টা ২০ নাগাত তাঁকে দ্রুত বাড়ি আসতে বলেিয়। বাড়ি এসে সুপর্না শােনেন তাঁর স্বামী হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে যান তিনি। খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছায় শুভব্রতর দুই দাদা এবং অন্যান্য আত্মীয়রা। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ভাই গুলিবিদ্ধ। শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা হয়েছে। কিন্তু সময় অতিবাহিত হতে থাকে। অনেক অপেক্ষার পর এসে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্স। যখন গুলিবিদ্ধ শুভব্রত বাবুকে কলকাতার অ্যাপেলাে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখন সন্ধ্যে ৭ টা বেজে গিয়েছে। কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকা গুলিবিদ্ধ শুভব্রত চক্রবর্তী পরের দিন ( ১৪/১০/২০১৮ ) ৫ টা নাগাদ মারা যান।

সুপর্নার অভিযােগ - অনেক ভেবেও এটা বুঝতে পারিনি আমার স্বামী কিভাবে গুলিবিদ্ধ হলেন ? তাছাড়া শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী ছিলেন, তা সত্বেও তারই মরনাপন্ন নিরাপত্তা রক্ষীর জন্যে কেন অনেক দেরীতে অ্যাম্বুলেন্স এলো! কেন করকুলি থেকে তাকে পুলিসের পাইলট গাড়ি করে নিয়ে যেতে হলো? করকুলির ১৫ নম্বর থেকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল ৪ কিমি রাস্তা যেতে এত দেরি কেন? সুপর্নার দাবি শুভেন্দু অধিকারী শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নয়, রাজ্যের অন্যতম প্রভাবশালি ব্যক্তি তাই ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। এখন পরিস্থিতর পরিবর্তন হয়েছে। তাই তিনি আমার স্বামীর মৃত্যুর বিচার চান।

সুপর্নার অভিযােগ পােস্ট মর্টেমের সময় , শুভব্রত বাবুর দাদা (দেবব্রত চক্রবর্তী) চিকিৎসকদের বলেছিলেন আমার ভাই এই কাজ করতে পারেনা। অবশেষে আড়াই বছরের বেশি সময় কাটার পর সুপর্না দেবী কাঁথি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে বিচার চেয়ে সত্য উদঘাটনের জন্যে অভিযোগ জানিয়েছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করলো সি আই ডি। এদিন চার সদস্য বিশিষ্ট দল বাড়িতে এসে স্ত্রী , দাদা ও পরিবারের লোকেদের সাথে কথা বলেছেন।

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in