আগামীকাল রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার আগে ফের ছয় শিশুর মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই ঘটনায় ফের একবার চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে। দূরদূরান্ত থেকে তাদের সন্তানদের নিয়ে ছুটে আসছেন হাসপাতালে। শিশুমৃত্যু ক্রমশই বাড়ছে।
প্রায় দুই মাস ধরে এই হাসপাতালে মৃত্যুর মিছিল চলছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি। শুধু সেপ্টেম্বর মাসে একবার বলেছিলেন, অজানা জ্বর। অসংখ্য শিশু ভুগছে জ্বর-শ্বাসকষ্টে। এখন এই হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫। গত দেড়মাসে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১০৩।
মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বারোটি শিশু, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ১২টি, বর্ধমানের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ন'টি, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনটি, ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতাল একটি, ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে মারা গিয়েছে একটি শিশু।
জ্বরের উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত যে ছয় জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন শুধু অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি ইনফেকশনের সঙ্গে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ছয় বছরের শিশুটির বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরে। মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর মূলত আগামী নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে। যদিও তিনি শিশু মৃত্যু নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু বলেননি।
এদিকে স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে এই শিশু মৃত্যুর তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত শিশুর মৃত্যু কি করে হতে পারে? প্রিম্যাচিওর ডেথ একইসঙ্গে এতগুলো শিশুর ক্ষেত্রে কিভাবে ঘটতে পারে? জ্বর ও শ্বাসকষ্টের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না। বাকি পাঁচ শিশু অপুষ্টি-সহ অন্যান্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে বলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি।
মেডিক্যাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই হাসপাতালের পেডিয়াট্রি বিভাগে ৩৪ জন শিশু অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি। নতুন করে গত একদিনে আরও ৩৩টি শিশু ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই এই উপসর্গে আক্রান্ত।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।