
২০১৪ সালের প্রাথমিক নিয়োগে চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন তৃণমূল তথা বর্তমান বিজেপি নেতানেত্রীরা। নাম রয়েছে শাসক দলের নেতানেত্রীদেরও। বিকাশ ভবন অভিযান চালিয়ে সিবিআই যে নথি উদ্ধার করেছিল, সেই নথিতেই রয়েছে নেতানেত্রীদের নাম পরিচয়। এমনকি নাম রয়েছে সুপারিশ করা চাকরিপ্রার্থীদেরও।
২০১৪ সালের প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সাল থেকে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গত বছর জুন মাসে এই মামলার তদন্তের স্বার্থে বিকাশ ভবনের ওয়্যারহাউসে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। সেই তল্লাশিতে উদ্ধার হয় নথি। সিবিআইয়ের সেই নথিতে নাম রয়েছে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন পুলিশকর্তা তথা বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের।
যদিও তাঁর পরিচয়ের কোনও উল্লেখ নেই। উল্লেখ্য, সেই সময় দিব্যেন্দু তৃণমূল নেতা ছিলেন এবং ভারতী তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে বিজেপিতে যোগ দেন দু’জন। বাকি সকলেই শাসক দলের নেতানেত্রী।
নথিতে নাম রয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের। জানা যাচ্ছে, ওই নথিতে বিধায়কের পরিচয়ে নাম রয়েছে নির্মল ঘোষ, বীণা মণ্ডল, শওকত মোল্লা, শ্যামল সাঁতরা, রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, গুলশন মল্লিকের। যার মধ্যে বর্তমানে নির্মল, বীণা, শওকত এবং গুলশন বিধায়ক। সকলেই শাসক দলের নেতানেত্রী। এছাড়া নথিতে নাম রয়েছে ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা চলচ্চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তীরও।
সূত্রের খবর, ওই নথিতে দিব্যেন্দুর নামের নীচে ১১ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম রয়েছে। একইভাবে মমতাবালার নামের নীচে রয়েছে ২০ জনের নাম, ভারতীর রয়েছে ৪ জনের নাম এবং শওকতের রয়েছে ২ জনের নাম। মনে করা হচ্ছে, এই নামগুলি সুপারিশ করেছিলেন নেতানেত্রীরা। এছাড়া শ্যামল সাঁতরা সুপারিশ করেছিলেন ২২ জনের নাম। বীণা মণ্ডল ১৩ জন, নির্মল ঘোষ ১৬ জন, গুলশন মল্লিক ১০ জন এবং রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ৫ জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন। সবমিলিয়ে ৩২৪ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, যার মধ্যে ১৩৪ জন চাকরিও পেয়েছিলেন।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “এসবের কিছুই জানি না। পুরোটাই চক্রান্ত। অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত নই”। অন্যদিকে, বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের দাবি, “হাসপাতালে রোগী ভর্তি করতে গেলেও সুপারিশ করা হয়। এটা কি অন্যায়? দেখতে হবে টাকা নিয়েছি কি না? সিবিআই যদি প্রমাণ করতে পারে, এক পয়সা নিয়েছি তা হলে যা বলবে মেনে নেব”।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন