“তৃণমূলের কাছে আমি আনওয়ান্টেড”, টিকিট না পেয়ে সোমের পর ফের মঙ্গলেও আক্ষেপের সুর শোনা গেল ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গলায়. মঙ্গলবারই নিজের অফিস থেকে সরিয়ে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। সেই জায়গায় রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। সেই সঙ্গে বিজেপিতে যাওয়ার জল্পনা জিইয়ে রেখে বললেন, “পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে অর্জুনের লড়াই হওয়া উচিত। মানুষের আবেগ আছে মোদিজির সঙ্গে।“
জানা গেছে মঙ্গলবারই বিজেপির পক্ষ থেকে লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে চলেছে। তাহলে কি ফের একবার ব্যারাকপুরের লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম শোনা যাবে? এর উত্তরে অর্জুন জানান্য, ‘‘সে তো সময় হলেই জানতে পারবেন। তবে খুব দেরি নেই।’’
সোমবারের পরে মঙ্গলবারও আক্ষেপের সুরে অর্জুনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘দলে এখন আমি আনওয়ান্টেড। আমার কোনও চাহিদা ছিল না। কিন্তু আমার দেড় বছর নষ্ট করা হল।’’ এরপরেই অর্জুনকে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলতে শোনা যায়, “কিছু দিনের মধ্যেই জানতে পারবেন আমি আছি কি নেই। আমার ডেথ ওয়ারেন্টে সই করে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে আমাকে বোঝাতে হবে আমি কোনও ভুল করিনি।“
উল্লেখ্য, সোমবার অর্জুন জানিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের কথা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার তিনি জানান, ‘‘আমাকে ফিরহাদ ফোন করে আবার একটা ললিপপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।’’ কী এই ‘ললিপপ’? অর্জুনের ঘনিষ্ঠ শিবির সূত্রে জানা গেছে, তাঁকে বরাহনগরের বিধায়ক আসন থেকে বিধায়ক হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, ওই কেন্দ্রের বিধায়ক তাপস রায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অর্জুনকে ওই আসন থেকে জিতিয়ে রাজ্যে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও নাকি প্রস্তাব দেওয়া হয়।
তবে ব্যারাকপুরের মাটি ছাড়তে নারাজ অর্জুন সিং। এব্যাপারে তিনি জানান, “যেটা ছিল সেটাই দেওয়া হল না, আবার অন্য কিছু নিয়ে কী করব।“ তবে মঙ্গলবারও প্রকাশ্যে ফিরহাদের ‘ললিপপের’ ব্যাখ্যা দেননি অর্জুন।
রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ থেকে লোকসভা নির্বাচনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল তৃণমূল। সেই তালিকায় নাম নেই ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। তাঁর জায়গায় এবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ অর্জুন। প্রার্থী না হতে পেরে তাঁর বিজেপিতে প্রত্যাবর্তনের জোরালো জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
২০১৯ –এর লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে অর্জুনকে প্রার্থী করা হয়নি। তার জায়গায় সেবার প্রার্থী হয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। টিকিট না পেয়ে রাতারাতি বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন। সেবার বিজেপির প্রতীকে নির্বাচনে জিতে সাংসদ হন তিনি। তবে ২০২২ সালে ঘরওয়াপসি হয় তাঁর। সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, “ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন